মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
সংসদ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৪ পিএম
মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাবটি প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয়, সেজন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য একেএম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা সরকার গঠনের পর থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে নানান পদক্ষেপ চালিয়েছি। এর ফলে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে চালানো হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত বছরের ১৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) একটি প্রস্তাব আনা হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন ওহিও অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাট এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান রো খান্না। পরে কো-স্পন্সর হিসাবে যোগ দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটি পোর্টার এবং নিউজার্সির ট ম্যালিনোস্কি।
শেখ হাসিনা বলেন, কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির কাছে পাঠিয়েছে। এটি যাতে বিবেচিত হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ঐকান্তিক ক‚টনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি বর্তমান সরকারের ক‚টনৈতিক সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই নয় বরং স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অগণিত মানুষের আত্মত্যাগ; বিশেষত মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের এবং বীরাঙ্গনা মা-বোনদের সম্মানিত করা হয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার কথা উলেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতা যে কোনো যুদ্ধকে ছাড়িয়ে গেছে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখের বেশি মানুষের আত্মত্যাগ ও লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। যুদ্ধের সময় মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের নৃশংসতা বিশ্বের অন্য যে কোনো যুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাৎসি নৃশংসতাসহ ইতিহাসের সব কালো অধ্যায়কে হার মানিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এত বেশিসংখ্যক মানুষকে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের চিত্র ইতিহাসে আর একটিও পাওয়া যাবে না। এই ইতিহাসকে স্মরণ রেখে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।