সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সময় একদিকে একটু হেলে থাকে। ফলে কখনো উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছে আসে, কখনো দক্ষিণ গোলার্ধ। আর আজ উত্তর গোলার্ধ সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকায়, আজকের দিনটি সবচেয়ে বড়। এ দিন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখায় খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ফলে এ দিনে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও ছোট রাত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন ও বড় রাত। ২১ জুনকে অনেকেই কর্কটক্রান্তি দিবস নামে চেনেন। কেউবা অয়ন দিবস বলে থাকেন। ইংরেজিতে একে পালন করা হয় সামার সলসটিস ডে হিসাবে। এদিন সূর্য আকাশে থাকবে মোট ১৩ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। সলসটিস ল্যাটিন শব্দ। মানে সূর্য এবং সিস্টেরার (sisterer) মানে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা।
উত্তরায়ণ যেভাবে হয়
বছরে দুবার ঘটে সলসটিস। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে দেশগুলোতে বেশি পরিমাণ সূর্যালোক পৌঁছায়। এর ফলে এ সময়কালে এখানে সামার সিজন বা গ্রীষ্মকাল থাকে। একেই বলে Summer Solstice. এই Solstice-এর সময়কালে পৃথিবী যখন তার অক্ষের ওপর প্রদক্ষিণ করে, তখন উত্তর গোলার্ধে অংশ সূর্যের দিকে বেশি হেলে থাকে। আর দক্ষিণ গোলার্ধ থাকে কিছুটা দূরে। এ পরিস্থিতিতে ২১ জুন সবচেয়ে বেশি পরিমাণ সূর্যালোক এসে পৌঁছায় উত্তর গোলার্ধে। কারণ এ দিনই অক্ষের ওপর প্রদক্ষিণ করার সময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি হেলে থাকে। পৃথিবীর নিয়মে উত্তর গোলার্ধে ২১ জুনের পর থেকে ছোট হওয়া শুরু করবে দিন, আর রাত হবে বড়।
নিজের ছায়াও দেখা যায় না
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২১ জুন মানুষ নিজের ছায়াও দেখতে পায় না। যখন সূর্য ঠিক কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর থাকে, তখন ছায়া কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এটি প্রকৃতির এক বিস্ময়কর ঘটনা।
পালিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনে পালিত হয় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান। প্রাচীনকালে ইউরোপের মানুষ এ দিনটি থেকে তাদের বছর শুরু করত বলে জানা যায়। মূলত গ্রীষ্মের সময় যে দিনটি সবচেয়ে বড় হতো সেই দিনের পর থেকে ফসল লাগানো এবং আগের ফসল কাটত তারা।