Logo
Logo
×

সারাদেশ

সরকারি চাকরির পাশাপাশি কৃষি উদ্যোক্তা শারমিন

Icon

  শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম

সরকারি চাকরির পাশাপাশি কৃষি উদ্যোক্তা শারমিন


 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘এক ইঞ্চি জমি পতিত রাখা যাবে না’- এ বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে সরকারি চাকরি করেও কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে এলাকায় আলোচনায় এসেছেন শেরপুরের তরুণী শারমিন সুলতানা রাকা। 
তার জমানো টাকা দিয়ে গ্রামে নিজের আড়াই বিঘা এবং অন্যের পতিত থাকা আরও সাড়ে ৪ বিঘা জমি চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নিয়ে মোট ৭ বিঘা জমিতে লাভজনক ফসল ভুট্টার আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে আশাতীত। তাই দেখে এলাকার কৃষক ও প্রতিবেশীরা তাকে বাহবা দিচ্ছেন। তার আবাদ করা ভুট্টাখেত দেখতে আসছেন অনেকেই।

শেরপুর সদর উপজেলার চর মোচারিয়া ইউনিয়নের নলবাইত গ্রামের রফিকুল ইসলাম রঞ্জুর মেয়ে শারমিন সুলতানা রাকা। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে অধ্যায়ন করছেন।

সম্প্রতি তার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে চাকরি হয়েছে। রাকা তার পারিবারিক অর্থনৈতিক দৈন্যতা কাটাতে অনেক আগে থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি একাধিক প্রাইভেটে পড়াতেন এবং চাকরি খুঁজছিলেন।

সম্প্রতি সোনার হরিণ চাকরি হওয়ায় একটু স্বস্তিতে আছেন তিনি। এরপরও তিনি থেমে নেই। চাকরির সুবাদে ইউনিয়নের মাঠে প্রান্তরে ছুটে চলার সময় তখন খেয়াল করেন তাদের গ্রাম এবং আশপাশের এলাকায় অনেক জমি পতিত রয়েছে। 

এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য তাকে উদ্বুদ্ধ করে। তা হলো ‘এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবে না।’ সেই থেকেই রাকা সিদ্ধান্ত নেন নিজেকে চাকরির পাশপাশি অফিস সময়ের পর কৃষিতে সামান্য হলেও অবদান রাখবেন।

জমানো কিছু টাকা দিয়ে তার নানার সহযোগিতায় অধিক লাভের ফসল ভুট্টার আবাদ শুরু করেন। গত ডিসেম্বর মাসে রোপণ করা ভুট্টা আগামী মে মাসের শুরুতেই উঠাতে পারবেন। বর্তমানে ভুট্টার ফলনও ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশাও করছেন তিনি।

শারমিন সুলতানা রাকা জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি আমি নিজে শহরের বিভিন্ন বাড়িতে প্রাইভেট পড়িয়ে জমানো টাকা এবং কিছুদিন অনলাইনে ড্রেসের ব্যবসা করে কিছু টাকা সঞ্চয় করেছিলাম। গত নভেম্বর মাসে আমার চাকরিটা হওয়ার পর চাকরির কাজে গ্রামের বাড়ি বাড়ি যেতে হয়। এ সময় আমি দেখলাম গ্রামের অনেক জমি পতিত থাকে। আমাদেরও কিছু জমি পতিত ছিল। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে আমিও উদ্বুদ্ধ হয়েছি।

গ্রামের কোনো জমি যেন পতিত না থাকে। তাই নিজেই প্রথম শুরু করলাম কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে। আমার আবাদকৃত ভুট্টার ফলন দেখে অনেকেই উৎসাহ জোগাচ্ছে, কেউবা আবার নিজে চাষ করার জন্য পরামর্শ নিচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগও আমাকে সহযোগিতা করেছে। শুরুতে সরকারি প্রণোদনার কিছুটা ভুট্টা বীজ পেয়েছি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছি। ধানের চেয়ে এ ভুট্টা আবাদ অনেক লাভজনক বলেই আমি এতে ঝুঁকেছি।

আগামীতে আমার ইচ্ছা আছে ভুট্টার পাশাপাশি লাভজনক আরও নতুন কিছু চাষাবাদ করার। এবার আমার ৭ বিঘা জমিতে এ পর্যন্ত রোপণ করা, শ্রমিক খরচ ও সারসহ অন্যান্য খরচ পড়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। এ জমি থেকে আমি ফলন আশা করছি বিঘাপ্রতি ৩০ মণ ভুট্টা। বাজার মূল্য এক হাজার দুইশ টাকা মণ হিসেবে ৭ বিঘা জমির ২১০ মণ ভুট্টা বিক্রি করতে পারব প্রায় আড়াই লাখ টাকায়। এতে তার প্রায় দ্বিগুণ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন।

ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহানারা বেগম জানান, রাকা আমাদের অফিস থেকে প্রণোদনার ভুট্টা বীজ নিয়ে ভুট্টার আবাদ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। তার মতো অন্যেরা এগিয়ে এলে গ্রামের কোনো জমি পতিত থাকবে না।  
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম