
টালিউড অভিনেত্রী শোলাঙ্কি রায় তার জীবনের প্রথম সিনেমার প্রথম হিরোকে নিয়ে নানা গল্প শোনালেন। আর তার প্রথম জীবনের সেই হিরো হচ্ছেন যিশু সেনগুপ্ত।
আজ শনিবার (১৫ মার্চ) যিশু সেনগুপ্তের জন্মদিন।
অভিনেত্রী যিশুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন, জন্মদিনে যিশুদাকে নিয়ে লিখতে হলে আমাকে একটু পেছনে ফিরে যেতে হবে। কারণ আমার প্রথম ছবির নায়ক যিশুদা। ভাবলে এখনও অবাক হই। ‘বাবা, বেবি ও’ সিনেমাটি ঘিরে তাই যিশুদার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব আরও পোক্ত হয়েছিল।
অভিনেত্রী বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই যিশুদার অভিনয় দেখছি। এত সুদর্শন অভিনেতা! আমার তো একসময়ে যিশুদার ওপর খুব বড় ‘ক্রাশ’ ছিল। ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর কয়েকটা অনুষ্ঠানে যিশুদার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই ভাবে আলাপ ছিল না। দাদা যে আমার প্রথম ছবির অংশ, সেটা জানার পর বিশ্বাস করতে পারিনি। এক ধাক্কায় ছোটবেলার স্মৃতিগুলো ফিরে ফিরে আসছিল।
শুটিংয়ের সময়েই যিশুদাকে আরও ভালোভাবে চিনতে পারি। মজার মানুষ। সবাইকে নিয়ে হইহই করতে ভালোবাসেন। তার থেকেও বড় কথা— আমি তখন নতুন। ‘উইন্ডোজ’-এর মতো বড় প্রযোজনা সংস্থার ছবি। সব মিলিয়ে একটু নার্ভাস ছিলাম। সেটেও শুরুর দিকে একটু চুপচাপ থাকতাম। কিন্তু যিশুদা এত বড় একজন অভিনেতা— সেটা আমাকে বুঝতে দেননি। বরং হাসিঠাট্টার মধ্য দিয়ে আমাকে আরও সহজ করে তুলেছিলেন।
শুটিংয়ের সময় আমি, অরিত্র (ছবির পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়), গৌরব (গৌরব চট্টোপাধ্যায়), বিদীপ্তাদি (বিদীপ্তা চক্রবর্তী) মিলে প্রচুর আড্ডা দিয়েছিলাম। একটা সিরিয়াস ঘটনা মনে পড়ছে।
শোলাঙ্কি রায় বলেন, একদিন শুটিংয়ে যাওয়ার পথে দুটি ছেলে আমার গাড়ি আটকায়। বুঝতে পারি— ওরা মদ্যপ অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন খুব খারাপ ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। আমি জীবনে হয়তো দুজনকে চড় মেরেছি। তার মধ্যে একজন ওই ছেলেটি! তারপর ফ্লোরে পৌঁছে খুব চুপচাপ ছিলাম। কী ঘটেছে, সবাই আমার মুখ থেকে শুনলেন। যিশুদা তো শুনেই অবাক। বললেন, কী! তুই চড়ও মেরেছিস? তার পর থেকে অনেক দিন যিশুদা আমাকে নিয়ে মজা করতেন। আসলে দাদা বুঝতে পেরেছিলেন, আমার মন খারাপ। তাই আমাকে আরও সহজ করার জন্যই মজা করছিলেন। আমিও তার পর হেসে ফেলেছিলাম। তবে আমি যে কাউকে, বিশেষ করে কোনো পুরুষকে চড় মারতে পারি, সেটি হয়তো দাদা বিশ্বাস করতে পারেননি। সেদিন থেকে একটু হলেও হয়তো দাদার কাছে আমার ভাবমূর্তি বদলে গিয়েছিল।
যিশুদার সঙ্গে এখন যোগাযোগটা খুবই কমে গেছে। এর মধ্যে দেখাও হয়নি। কারণ দাদা এখন অনেকটা সময় বলিউড ও দক্ষিণী প্রজেক্টের জন্য শহরের বাইরে থাকেন। কিন্তু মাঝেমাঝে মনে হয়, ‘বাবা, বেবি ও’-র সিক্যুয়েল তৈরি হলে কেমন হতো? প্রযোজনা সংস্থা এবং পরিচালক যদি রাজি হন, তা হলে আমিও রাজি। আবার সবাই মিলে মজা করে একটা ভালো ছবি তৈরি করা যাবে।
অভিনেত্রী বলেন, যিশুদার জন্মদিনে এটাই চাই—যিশুদা আরও ভালো ভালো কাজ আমাদের উপহার দিক। আর আশা করছি, খুব দ্রুত আমাদের দেখাও হবে এবং একসঙ্গে নতুন কোনো কাজও করব।