ফেব্রুয়ারিতে দেখুন হলিউডের আলোচিত ১০ সিনেমা
খালিদ হাসান
প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১৭ পিএম
সিনেমাপ্রেমিরা অনলাইনে প্রতিনিয়ত সেরা সিনেমাগুলোর খোঁজ করে থাকেন। রিভিউ দেখে সিনেমা দেখার অভ্যাসও আছে অনেকেরেই। যেন সিনেমা দেখার পর এই ভেবে খারাপ না লাগে যে, কী দেখে সময় নষ্ট করলাম?
এই ফেব্রুয়ারিতে প্রেক্ষাগৃহে আসছে হলিউডের আলোচিত ১০ সিনেমা। প্রেম, হরর, কমেডি, অ্যাকশন ঘরনার এই সিনেমাগুলো দেখে করতে পারেন আপনার সময়কে উপভোগ।
বিকামিং লেড জেপেলিন
আমেরিকান সংগীত ব্যান্ড ‘দ্য বিটলস’ দুনিয়ার সবচেয়ে বড় এবং প্রভাবশালী রক গ্রুপগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছিল। ব্যান্ডটি নিয়ে অনেক সিনেমা রয়েছে, কিন্তু বিকামিং লেড জেপেলিন হলো প্রথম অনুমোদিত ডকুমেন্টারি।
সিনেমাটি ব্যান্ডের চার সদস্যের ব্যক্তিগত জীবন এবং তাদের শুরু থেকে গড়ে ওঠার কাহিনী তুলে ধরেছে। যেখানে শিল্পী রবার্ট প্লান্ট, গিটারিস্ট জিমি পেজ এবং বেসিস্ট জন পল জোনসের সাক্ষাৎকার রয়েছে। ১৯৭১ সালের একটি সাক্ষাৎকারে ড্রামার জন বোনহ্যামের দৃষ্টিকোণও উঠে এসেছে।
আর্মান্ড
এটি একটি প্ররোচনামূলক এবং অদ্ভুতভাবে হাস্যরসাত্মক নরওয়েজিয়ান সিনেমা। এটি লিখেছেন এবং পরিচালনা করেছেন হালফডান উলম্যান টন্ডেল। তিনি সুইডিশ চলচ্চিত্র কিংবদন্তি ইনগ্রিড বার্গম্যান এবং লিভ উলমানের নাতি।
সিনেমাটির কেন্দ্রে রয়েছেন রেনেট রেইনসভে। সিনেমায় তাকে তার ছেলের স্কুলে ডাকা হয়, কারণ তার ছেলেকে একজন সহপাঠীকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। গল্পটি হাস্যকর এবং গা-ছমছমে, যা মূলত মধ্যবিত্ত সমাজের অন্ধকার দিককে উন্মোচন করে।
আই’ম স্টিল হিয়ার
২০২৫ সালের অন্যতম উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের সফল চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে এটি একটি, যা অস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য মনোনীত হয়েছে। সিনেমাটিতে ১৯৭১ সালের ব্রাজিলের একটি রাজনৈতিক থ্রিলারের গল্প উঠে এসেছে, যেখানে রুবেনস এবং ইউনিক পাইভা তাদের পরিবারের সাথে রিও ডি জেনিরোতে সমুদ্রতটে বসবাস করছিলেন। কিন্তু রুবেনসকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কারণে গ্রেফতার করা হয়। সিনেমাটি ‘গভীরভাবে হৃদয়গ্রাহী’ বলে প্রশংসিত হয়েছে।
দ্য ডে দ্য আর্থ ব্লিউ আপ: অ্যা লুনি টিউনস মুভি
যারা অ্যানিমেটেড সিনেমা পছন্দ করেন তাদের জন্য এই এটি একটি পছন্দের সিনেমা হতে পারে। ড্যাফি ডাক এবং পর্কি পিগ তাদের নিজেদের ৯১ মিনিটের অ্যানিমেশন সিনেমায় প্রধান চরিত্র হিসেবে হাজির হচ্ছে, যেটি তাদের চরিত্রের আত্মপ্রকাশের নব্বই বছর পরে মুক্তি পাচ্ছে।
গল্পে, ড্যাফি এবং পর্কি (যাদের দুজনেরই কণ্ঠ দিয়েছেন এরিক বাউজা) ড্যাফি এবং পর্কি একটি বুদবুদ গাম ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করেন, যেখানে তারা এলিয়েনদের একটি ষড়যন্ত্র উন্মোচন করেন।
সিনেমাটি দ্য আইরন জায়ান্টের পর থেকে ওয়ার্নার ব্রস নির্মিত সবচেয়ে সুন্দর অ্যানিমেটেড মুভি।
দ্য মাংকি
স্টিফেন কিংয়ের একটি ছোট গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দ্য মাংকি সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে। সিনেমাতে একটি সেলিব্রেটি টুইন ভাইয়ের গল্প তুলে ধরা হয়, যার কাছে একটি বিষাক্ত উইন্ড-আপ বানর খেলনা রয়েছে যা রহস্যজনকভাবে মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সিনেমাটি একটি কমেডি-হরর থিম নিয়ে তৈরি, যেখানে মৃত্যু সম্পর্কে একটি হাস্যকর অভ্যুত্থান দেখানো হয়।
ব্রিজেট জোন্স: ম্যাড অ্যাবাউট দ্য বয়: ব্রিজেট জোন্স চরিত্রে ২৪ বছর পর আবার ফিরছেন রেনি জেলওয়েগার। এই গল্পে ব্রিজেট একজন সিঙ্গেল মাদার, তার স্বামী মার্ক ডার্সি’র মৃত্যুর পর নতুন জীবন শুরু করছেন। তার নতুন প্রেমিকও আছেন। প্রেমের নতুন প্রেমিকের প্রতি তিনি বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সিনেমাটিতে একজন মানুষ জীবনের অনেক উত্থান পতনের পরও কীভাবে জীবনে হাসিখুশি কর্মোদ্দোম থাকে তা দেখানো হয়েছে।
লাভ হার্টস
এই সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৮০’র দশকে ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য টেম্পল অব ডুম’ এবং ‘দ্য গনিস’ সিনেমায় বড় রোল করা কে হুয়ি কুয়ান দীর্ঘদিন পরে প্রধান চরিত্রে ফিরে আসছেন। সিনেমাটি একটি অ্যাকশন কমেডি, যেখানে কুয়ান একজন গিকি এস্টেট এজেন্টের চরিত্রে অভিনয় করছেন, যিনি একজন গ্যাংল্যান্ড এনফোর্সারের গোপন অতীতের অধিকারী।
ক্যাপ্টেইন আমেরিকা: ব্র্যাভ নিউ ওয়ার্ল্ড
ক্যাপ্টেইন আমেরিকার নতুন এ ফ্র্যাঞ্চাইজটিতে এখন যেহেতু ক্রিস ইভানস, স্টিভ রজার্সের চরিত্রে অভিনয় করছেন না, প্রশ্ন হচ্ছে- দর্শকরা কি অন্য কাউকে ওই চরিত্রের পেটেন্ট করা লাল, সাদা এবং নীল শিল্ড হাতে দেখতে পছন্দ করবে? বিশেষ করে, দর্শকরা কি অ্যান্থনি মাকি’র স্যাম উইলসনকে দেখতে চাইবেন, যিনি পূর্ববর্তী মার্ভেল সিনেমাগুলিতে ক্যাপ্টেন আমেরিকার সহযোগি ছিলেন এবং এখন তাকে মূল চরিত্র হিসেবে প্রমোট করা হয়েছে?
ট্রেইলার এবং পোস্টার দেখে মনে হচ্ছে, স্টুডিও নির্বাহীরা আশা করছেন যে সিনেমার বড় আকর্ষণ অন্য একটি চরিত্র হবে। প্রয়াত উইলিয়াম হার্টের স্থলাভিষিক্ত হয়ে হ্যারিসন ফোর্ড চরিত্রে অভিনয় করছেন থ্যাডিয়াস রস। তাকে এখানে একজন সাবেক ইউএস আর্মি জেনারেল এবং হাল্কের প্রধান শত্রু হিসেবে দেখা যাবে। তিনি সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নতুন ক্যাপ্টেন আমেরিকার সমর্থন পেতে চান, কিন্তু তাদের আলোচনা বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়, যখন রস নিজে একটি উজ্জ্বল লাল রঙের হাল্কে পরিণত হন।
দ্য র্জজ
সিনেমাটি প্রেম, হরর এবং অ্যাকশনকে একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে। এটি পরিচালনা করেছেন স্কট ডেরিকসন এবং এতে অভিনয় করেছেন আন্না টেলর জয় এবং মাইলস টেলার। সিনেমার গল্পে দেখা যায়, দুটি এলিট স্নাইপারকে একটি দূরবর্তী, কুয়াশাচ্ছন্ন উপত্যকার দুই পাশে আলাদা কংক্রিট অবজারভেশন টাওয়ারে এক বছর কাটানোর জন্য চুক্তি করা হয়। তাদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কোনো উচ্চ প্রযুক্তির ব্যবস্থা নেই, তবে তারা ফ্ল্যাশকার্ড এবং বিনোকুলার দিয়ে কথা বলে এবং ফ্লার্ট করে। তবে তাদের প্রেমের পথে একমাত্র বাঁধা হিসেবে দাঁড়ায় সেই উপত্যকাটিই। কারণ সেখান থেকে বেরিয়ে আসে দানবরা। এটি ভালোবাসা দিবসে দেখার জন্য উপযুক্ত সিনেমা, আপনি যদি প্রেমের মেজাজে না থাকেন তবুও।
ব্রিং দেম ডাউন
এটি একটি অন্ধকার থ্রিলারধর্মী সিনেমা, যা আয়ারল্যান্ডের গ্রামীণ এলাকায় দুটি পরিবারের দ্বন্দ্ব এবং তাদের পারস্পরিক সন্দেহ ও সহিংসতা নিয়ে তৈরি হয়েছে। দুটি পরিবারই ভেড়া পালন করে। যখন একটি পরিবার অপর পরিবারকে দুটি ভেড়া চুরির অভিযোগ তোলে, তখন যে সংঘাত শুরু হয় তা যেন এক বাস্তবধর্মী কিচেন সিনক ড্রামার মতোই বিশ্বাসযোগ্য। তবে এটি গ্যাংস্টার ছবির মত অস্থিরতা এবং উত্তেজনায় ভরা।