ছবি: সংগৃহীত
কষ্টের গল্প নাকি মায়ের ভাষায় লিখতে হয়! বাঙালি অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া বেঁছে নিয়েছেন ইংলিশ। ভক্ত-সমর্থকদের জন্য লিখেছেন এক ঝাঁক কষ্টের গল্প। সেই গল্পে আছে একতরফা প্রেমের কাহিনী, হৃদয়ভঙ্গ কিংবা উপেক্ষিত হওয়ার কথা।
একের পর এক সাজানো সেই গল্পগুলো থাকছে এখানে। ফারিয়ার দীর্ঘশ্বাসের সেই ইংরেজি লেখা হুবহু বাংলা ভাষায় তুলে দেওয়া হলো—
একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে কতই না উচ্ছ্বাসিত ছিলাম।
আজ তার হলুদ অনুষ্ঠান। বিশেষ দিনটির জন্য একটি লেহেঙ্গাও বানানো হয়েছিল। দিন গুনছিলাম
সেই আনন্দঘন মুহূর্তের জন্য। কিন্তু হঠাৎ রাতের মাঝেই শরীর কাঁপতে শুরু করল। ভোরে উঠে
দেখি, ফ্লুতে কাবু হয়ে বিছানা থেকে উঠতেই পারছি না। এখন তো জানিই না বিয়ের অনুষ্ঠানে
যেতে পারব কি না।
এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে। একবার অনেক দিন আগে একটি কনসার্টের জন্য
প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এক মাস আগেই পোশাক ঠিক করে ফেলেছিলাম। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই
টিকিট নিশ্চিত করার জন্য আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছিল।
কিন্তু যখন সেই দিন এলো, স্টেডিয়ামের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। ভেতরে আর প্রবেশ
করতে পারিনি।
কয়েক বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম।
এটি ছিল আমার প্রথম বিশ্ব মঞ্চে কাজ করার সুযোগ। সবকিছু প্রস্তুত ছিল। কাগজপত্র জমা
দেওয়ার চার দিন আগে দূতাবাস বন্ধ হয়ে গেল কোভিডের কারণে। ফ্লাইটও বন্ধ হলো। সেই সঙ্গে
প্রকল্পটিও বাতিল হয়ে গেল।
আমার প্রথম সিনেমা ‘দেবী’
মুক্তির আগেও এমনই ঘটেছিল। পরিবারে অনেক সংগ্রামের পর অবশেষে একটি পেশা বেছে নিয়েছিলাম।
বাবা-মাকে গর্বিত করার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু সিনেমা মুক্তির ছয়-সাত মাস আগেই বাবা
মারা গেলেন। তিনি কখনোই আমার কাজটি দেখতে পারলেন না।
কয়েক বছর আগে গভীর প্রেমে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল জীবনের সব কঠিন
মুহূর্ত আমাকে তার কাছে নিয়ে আসার জন্যই ছিল। এক বছর সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ একদিন
সে হারিয়ে গেল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পেল না। এক মাস পর জানতে পারলাম
সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেছে। আর কখনো ফিরে আসবে না।
জীবনে যখনই কিছু নিয়ে সত্যিকার অর্থে নিজের করে চাই, তখনই সেটা
ফসকে যায়। মনে হয়, জীবনের জন্য যেন ভিন্ন কোনো চিত্রনাট্য লেখা আছে। তবে নিজেকে সান্ত্বনা
দিই এই ভেবে— আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী। হয়তো তিনি আমাকে এমন কিছু থেকে রক্ষা
করেন যা আমি দেখতে পাই না। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—কিভাবে উত্তেজিত হওয়া বন্ধ করব?
কারণ এক্সাইটমেন্টের পরের পতনটি যেন দ্বিগুণ কষ্টদায়ক।