চিলিম্পা হতে পারলেন না দীপিকা, অধরা রণবীর; যা বললেন পরিচালক
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
দীপাবলিতে মুক্তি পেয়েছে পরিচালক রোহিত শেঠির ‘পুলিশ ব্রহ্মাণ্ড’-এর সাম্প্রতিক ছবি ‘সিংহাম অ্যাগেইন’। এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন অজয় দেবগন, কারিনা কাপুর খান, অক্ষয় কুমার, জ্যাকি শ্রফ, টাইগার শ্রফ। এ ছাড়া আছেন পুলিশ কর্মকর্তা চরিত্রে রণবীর-দীপিকা দম্পতি।
চিত্রনাট্য অনুযায়ী, তারা দুজনেই পুলিশ আধিকারিক। কিন্তু সুযোগ থাকলেও তাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক দেখাননি পরিচালক রোহিত শেঠি। অথচ দীর্ঘ দিন ধরেই এ ছবি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ ছিল, বিশেষ করে অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনকে নিয়ে। কারণ রোহিতের ‘পুলিশ ব্রহ্মাণ্ডে’ তিনিই প্রথম নারী কর্মকর্তা এবং নারী শক্তি।
এদিকে বাঙালির পরশুরাম (রাজশেখর বসু) হনুমানকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। রামের একনিষ্ঠ ভক্ত হনুমানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছিল বানর-রানি চিলিম্পার। বাল্মিকী বা কৃত্তিবাস তাদের রামায়ণের কাহিনিতে কোথাও হনুমানের সঙ্গিনীর কথা উল্লেখ করেননি। কিন্তু রসিক পরশুরামের কল্পনা-কুঠারের আঘাতে নড়ে বসেছিল হনুমান। তারও মনে ধরেছিল— জীবনে সঙ্গিনী প্রয়োজন। খোঁজ করতে করতেই সন্ধান মিলেছিল চিলিম্পার। তবে বিস্তর গোলমালের পর শেষ পর্যন্ত নাক-কান মুলে সীতাদেবীর কাছে আজীবন অকৃতদার হয়ে পূর্বপুরুষদের পানিপান করার বড়ই চেয়েছিলেন পরশুরামের হনুমান।
পরশুরামের ‘হনুমানের স্বপ্ন’ গল্পটি রামায়ণের ‘স্পিন অফ’ হলেও তা বিশুদ্ধ কল্পনা। ভারতীয় সংস্কৃতিতে হনুমান একান্তভাবেই ‘অ-রোমান্টিক’ এক ব্যক্তিত্ব। তার সারাজীবন রাম-সীতার চরণেই নিবেদিত।
ধরেই নেওয়া যায় পরশুরামের গল্পটি পড়েননি, তবু সে পথেই হাঁটলেন পরিচালক রোহিত শেঠিও। এক পর্দায় রণবীর সিংহ-দীপিকা পাড়ুকোনকে এনেও কোনো রোমান্টিক দৃশ্য তৈরি করলেন না তিনি। নির্মাতা বললেন—মানুষের আবেগের কথা ভাবতে হবে তো! আসলে রোহিতের ‘সিংহাম অ্যাগেইন’ তৈরি হয়েছে রামায়ণের ছায়ায়। সেখানে রণবীরকে গড়া হয়েছে হনুমানের আদলে। তাই কোনোভাবেই তার বিপরীতে রোমান্টিক করে তোলা গেল না দীপিকাকে। যদিও শেষ পর্যন্ত রোহিত স্বীকার করলেন, আসলে তিনি ভয় পেয়েছিলেন।
কেন রোমান্টিক সম্পর্ক দেখালেন না রোহিত? সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক বলেন, যখন রামায়ণ নিয়ে কাজ হয়, তখন সেই মহাকাব্যের সঙ্গে বহু মানুষের জড়িত থাকা আবেগের কথাও ভাবতে হয়। আসলে এর সঙ্গে আমার আবেগও জড়িয়ে রয়েছে। আমরা হয়তো রণবীর ও দীপিকার ভালোবাসার দিকটা দেখাতে পারতাম। কিন্তু ছবিতে রণবীরের আগমন তখনই ঘটছে, যখন হনুমানের কাহিনি বর্ণিত হচ্ছে। তাই সচেতনভাবেই প্রেমের প্রসঙ্গ সরিয়ে রাখা হয়েছে।
এমনকি পুরো ছবিতে কোনো গানও ব্যবহার করেননি তিনি। রোহিত বলেন, সচেতনভাবেই প্রেমের অনুষঙ্গে গানও ব্যবহার করা হয়নি। কারণ ছবি তৈরি করে কেউই কারও ভাবাবেগে আঘাত করতে চান না। বিশেষত রামায়ণের মতো বিষয় নিয়ে কাজ করতে গেলে একটু বেশিই সচেতন থাকতে হয়।
রোহিত শেঠি স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি ভয় পেয়েছিলেন। এমনকি ছবি মুক্তির সময়ও সেই ভয় তাদের তাড়া করেছে বলে দাবি করেন তিনি। পরিচালক বলেন, আমরা সবসময় সচেতন থাকতাম, রণবীর বা বেবো (কারিনা) যেন এমন কিছু না করে ফেলেন, যাতে দর্শকদের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। তিনি বলেন, ছবি মুক্তির সময় পর্যন্ত আমরা ভয়ে ভয়ে ছিলাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় ছবি মুক্তির পর অবশেষে আমাদের মুখে হাসি ফোটে।