বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। আওয়ামী লীগ পতনের পর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।
আজ দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনে অনেক কিছুই বদলে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে বিনোদন জগতেও। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রায় বন্ধ ছিল সব ধরনের শুটিং। যার ফলে অনেকেই হয়েছেন বেকার। এর মধ্যে রিপন হাওলাদার একজন। এ মুহূর্তে সংসার চালাতে ঢাকার উত্তরা এলাকায় ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন তিনি।
এক সময় চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন রিপন। তবে এখন শুটিং না থাকায় জীবিকা নির্বাহের জন্য সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।
রিপন বলেন, ২৫ বছর ধরে মিডিয়ায় কাজ করছি। কোনো দিনও ভাবিনি, জীবনে এই দুঃসময় আসবে, বেকার হয়ে যাব! পরিবার নিয়ে অভাব–অনটনে থাকতে হচ্ছে। প্রোডাকশন ম্যানেজারদের কোনো স্বীকৃতি নেই। দেখার কেউ নেই। এখন হকারও বেড়েছে। এখানেও টিকে থাকা কঠিন।
রিপন ছাড়াও প্রোডাকশন ম্যানেজার কামরুল বলেন, চার সন্তান নিয়ে এখনো আমাকে সংগ্রাম করতে হয়। কল্পনাও করিনি এমন জীবনযাপন করতে হবে। খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছি।
প্রোডাকশন ম্যানেজার আবদুল বলেন, করোনার সময়ের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছি। তখন অনেকেই সহায়তা করেছে। বাচ্চার দুধ কিনেছি। নিজেরা ডালভাত খেয়েছি। কিন্তু এখন এমন অবস্থা— দুঃখের কথা শোনার মতো কেউ নেই।
এদিকে প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যমতে, তাদের সদস্য ২৫০ জন। তবে ঘুরেফিরে ২০-৩০ জনের কাজ রয়েছে। বাকিদের বেশিরভাগই এখন বেকার। সংসার চালানোর জন্য তারা কেউ চা-পান, কেউ তরিতরকারি বিক্রি, আবার কেউ ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোসহ নানা পেশায় যুক্ত হয়েছেন।
প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. আবু জাফর বলেন, সংগঠনের ৮০ শতাংশের বেশি সদস্য বেকার। জুলাই থেকে একেবারেই কাজ নেই। সব সেক্টর ভালোভাবে চললেও প্রোডাকশন টিম এখনো পুরোপুরি শুটিংয়ে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।