Logo
Logo
×

বিনোদন

সৃজিত আমার কাছে কোনো পরিচালক নয়: রুক্মিণী

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম

সৃজিত আমার কাছে কোনো পরিচালক নয়: রুক্মিণী

পূজায় মুক্তি পাচ্ছে টালিউড অভিনীত রুক্মিণী মৈত্রের ছবি ‘টেক্কা’। এ ছবি ছাড়াও তিনি কি প্রতিযোগীদের টেক্কা দিতে বিশ্বাসী? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের মুখোমুখি তিনি। এ অভিনেত্রী ফোন ধরেই জানালেন— মুম্বাই থেকে সবেমাত্র কলকাতায় ফিরেছেন। সাক্ষাৎকার দিতে প্রস্তুত আছেন তিনি। 

আপনি কি ক্লান্ত— আনন্দবাজারের এমন প্রশ্নের উত্তরে রুক্মিণী বলেন, একদমই নয়। ছবি মুক্তি পাচ্ছে, এখন বিশ্রামের প্রশ্নই আসে না। 

প্রশ্ন: ‘পাসওয়ার্ড’-এর পাঁচ বছর পর আবার পূজায় আপনার অভিনীত ছবি ‘টেক্কা’ মুক্তি পাচ্ছে। আপনি নিশ্চয়ই উত্তেজিত?

রুক্মিণী: (হেসে) তাই কি! সত্যি বলছি— আমি ততটা ভেবে দেখিনি। প্রশ্নটার পর উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল। কারণ গত পাঁচ বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। সিনেমা জগৎ প্রত্যেক শুক্রবার বদলে যাচ্ছে। অভিনেত্রী হিসেবে আমিও প্রত্যেক ছবির সঙ্গে একটু একটু করে বদলে যাচ্ছি। কিন্তু পূজার ছবি নিয়ে উত্তেজনা এতটুকুও বদলায়নি। ব্যক্তি রুক্মিণী এখনো একই রয়ে গেছে।

প্রশ্ন: অভিনেত্রী হিসেবে নিজের মধ্যে কী কী পরিবর্তন লক্ষ করেছেন?

রুক্মিণী: আমি নিজের উন্নতিতে বিশ্বাস করি। পাঁচ বছর আগে আমি ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন এসেছিলাম। কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না। ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষাও সেই অর্থে ছিল না। তখন সব সময়েই বলতাম যে, আমার প্রথম প্রেম মডেলিং। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে করতে এখন বলতেই পারি— এখন অভিনয়ের প্রেমে পড়ে গেছি। অ্যাকশন আর কাটের মধ্যেই এখন ভালো লাগে। চরিত্রগুলোকে সম্মান করতে শিখেছি। হয়তো আগের মতো এখনো লিখতে পারি। কিন্তু এখন ভাষার ব্যাকরণটা আরও ভালো করে রপ্ত করতে পেরেছি।

প্রশ্ন: এখন তা হলে প্রথম প্রেম অভিনয়?

রুক্মিণী: মডেলিং প্রথম প্রেম। আর অভিনয় শেষ ভালোবাসা। কারণ প্রথম প্রেম অনেক হতে পারে। কিন্তু এই প্রেমটা রয়ে যাবে।

প্রশ্ন: দেব শুনলে রেগে যাবে তো।

রুক্মিণী: (হাসতে হাসতে) পরের প্রশ্ন।

প্রশ্ন: ‘বুমেরাং’-এ ন্যাড়া মাথা। ‘টেক্কা’য় ছোট চুল। প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু লুক নিয়ে এতটা সাহস দেখাবেন না।

রুক্মিণী: ধন্যবাদ। আমার মা তো মজা করে বলেছিলেন— আগের ছবিতে ন্যাড়া হয়েছিলি। এবার মাথায় একটু চুল গজিয়েছে। আসলে আমি নিজের মতো কাজ করতে পছন্দ করি। এমন চরিত্র, যা শুধু আমাকে নয় একই সঙ্গে দর্শককেও মজা দেবে। অনেকেই বারণ করেছিলেন। লুক যদি চরিত্রের ৫০ শতাংশ হয়, তা হলে বাকি ৫০ শতাংশ অভিনয়। আসলে একটাই তো জীবন। সবাই যেটা করছে, আমিও সেটি করলে নিজস্বতা হারিয়ে যায়। কার ভালো লাগছে বা কার ভালো লাগছে না, সেটি ভাবতে গেলে আমি তাদের মতো হয়ে যাব।

প্রশ্ন: ‘টেক্কা’য় মায়া চরিত্রটি আপনার আগের চরিত্রগুলো থেকে কতটা আলাদা?

রুক্মিণী: খুব কঠিন চরিত্র। পুলিশ অফিসার। একটু পুরুষালি ভাব আছে। কথাও সেভাবে বলে। অ্যাকশনও করে। এখন আর বেশি বলতে চাই না। কিন্তু আমার ক্যারিয়ারের কঠিনতম তিনটি চরিত্রের মধ্যে মায়া একটি।

প্রশ্ন: সৃজিত কতটা সাহায্য করেছিলেন?

রুক্মিণী: সৃজিত আমার কাছে কোনো পরিচালক নয়, ও আমার কাছে একটা অভিজ্ঞতা। সৃজিতের সবচেয়ে বড় গুণ— একজন অভিনেতার থেকে ও কী চাইছে, সেটা ওর কাছে স্পষ্ট। আমার আগের ছবিগুলো শুটিংয়ের আগে পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা করতাম। কিন্তু এবারে ততটা সময় পাইনি। তাই ও ঠিক আমার কাছে কী চাইছে, সেটি সেটে গিয়েই বুঝতে পারি। একশ জন দর্শকের যদি মায়াকে পছন্দ না হয়, তার দায় আমার। কিন্তু একজনেরও ভালো লাগলে, সেই কৃতিত্ব কিন্তু সৃজিতের।

প্রশ্ন: এই ছবিতে দেব একটি বাচ্চা মেয়েকে অপহরণ করছে। মায়ার কাঁধে মেয়েটিকে উদ্ধারের দায়িত্ব। দেবকে যদি কেউ অপহরণ করে, তা হলে আপনি উদ্ধার করতে যাবেন?

রুক্মিণী: (হাসতে হাসতে) ওকে অপহরণ করলে আরও কয়েক দিন তার কাছে রেখে দিতে বলব। কারণ ও এতটাই ব্যস্ত যে, ছুটি পায় না। তাই অপহরণ করে ওকে এমন জায়গায় রাখা উচিত, যেখানে ওর কাছে কোনো ফোন থাকবে না। এক-দুই মাস কাজ থেকে দূরে থাকুক। তার পর আমি গিয়ে না হয় ছাড়িয়ে নিয়ে আসব।

প্রশ্ন: ‘টেক্কা’র শুটিংয়ের সময়ে দেব নাকি ‘খাদান’-এর কাজেও ব্যস্ত ছিলেন। লোকসভা ভোটের পর ছবির কাজ। এখন ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি। দেব কি আপনাকে সময় দিতে পারেন?

রুক্মিণী: আমার মনে হয়, ভগবান তাকেই দায়িত্ব দেন, যিনি সেগুলো পালন করতে পারেন। আর খুব কম মানুষই সেই সুযোগ পান। আমি খুব খুশি যে, দেব তাদের মধ্যে একজন। আমি তো মানুষটাকে চিনি। যে ওকে চিনতে পারবে, সে অভিযোগের তুলনায় ওকে নিয়ে বেশি গর্বিত হবে।

প্রশ্ন: ‘বহুরূপী’ বা ‘শাস্ত্রী’র ট্রেলার দেখেছেন?

রুক্মিণী: মিঠুন দার সঙ্গে তো সেদিন দেখা হলো। কিন্তু ‘শাস্ত্রী’র ট্রেলার এখনো দেখা হয়নি। তবে গল্পটা আমি শুনেছিলাম। খুব ভালো লেগেছিল। তার ওপর মিঠুন দা রয়েছেন। ‘বহুরূপী’র ট্রেলার দেখে শিবুকে (পরিচালক, অভিনেতা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) মেসেজও করেছিলাম। আবীরের (আবীর চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে আমি খুব মজা করি। ওকে বলেছিলাম— তুমিও পুলিশ, আমিও পুলিশ। কিন্তু কে কাকে টেক্কা দেবে, সেটি যথাসময়েই বোঝা যাবে। আমি জানি না, ছেলেরা কোলো ভালো কিছু করলে আমি কেন যেন একটু প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ি। কিন্তু মেয়েরা হলে আমি তখন প্রশংসাই বেশি করি।

প্রশ্ন: পূজার তিনটে ছবিকে সাজাতে বলা হলে আপনি কোন ছবিকে কোথায় রাখবেন।

রুক্মিণী: নিজের ছবি। তাই ‘টেক্কা’ সব সময়েই প্রথমে থাকবে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান বলা খুব কঠিন। এই বছর যেহেতু মাত্র তিনটে ছবি, তাই প্রতিযোগিতার রেশটাও কম। ছবি কম বলে আশা করি প্রত্যেকেই ভালো শো পাবে। দর্শক বিভাজনের সম্ভাবনাও কম থাকবে। তাই ব্যবসার দিক থেকে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তিনটে ছবি পূজায় ভালো চললে কিন্তু এই পূজায় সবাই লাভ করবে।

প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে রেষারেষির কথা শোনা যায়। এই যে নিজে থেকে অন্যের প্রশংসা করেন, ইন্ডাস্ট্রিতে সামাজিকমাধ্যম ছাড়া ব্যক্তিগত স্তরে সবাই কি অন্যের প্রশংসা করেন?

রুক্মিণী: কে কী করে, তা বলতে পারব না। তবে আমি এ রকমই। ‘প্রতিযোগী’ হলেও কারও ভালো কাজ দেখলে আমি প্রশংসা করি। প্রশংসা করলে তার যদি মুখে একটু হাসি ফোটে, তাতে তো আমার কোনো ক্ষতি নেই। ‘মির্জ়া’র সময়ে ঐন্দ্রিলাকে (ঐন্দ্রিলা সেন) ফোন করেছিলাম। কোয়েলের (কোয়েল মল্লিক) কোনো কিছু ভালো লাগলে ওকে মেসেজ করে জানাই। সামাজিকমাধ্যমে মিমির (মিমি চক্রবর্তী) কোনো ছবি হয়তো পছন্দ হয়েছে, সেটিও ওকে ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছি। দিনের শেষে তো আমরা সবাই একে অপরের বন্ধু।

প্রশ্ন: এটা কিন্তু বড় গুণ।

রুক্মিণী: ‘ভালো’কে ভালো বলার সাহস আমার রয়েছে। টেক্কার ট্রেলার যদি খারাপ হলো, তা হলে তো সবাই সামাজিকমাধ্যমে লিখে ভরিয়ে দিতেন! আসলে আমাদের একটা কোনো পদক্ষেপ ভুল হলে একশ জন সমালোচনা করতে হাজির হন। কিন্তু কিছু ভালো করলে, তখন একজনেরও প্রশংসা খুঁজতে হলে দুরবিনের প্রয়োজন হয়। এভাবে মানুষ হিসেবে আমরা পিছিয়ে পড়ছি।

প্রশ্ন: পূজায় কি কলকাতায় থাকবেন?

রুক্মিণী: ছবি মুক্তি পাচ্ছে, তাই শহরেই রয়েছি। তার পর দিল্লিতে দাদা-বৌদির কাছে যাব। ২০ অক্টোবর আমার ভাইঝি আমায়রার জন্মদিন। সেদিনটা ওর সঙ্গেই কাটানোর ইচ্ছে রয়েছে।

প্রশ্ন: ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ ছবির মুক্তির দিন প্রকাশ্যে এসেছে। ‘দ্রৌপদী’র প্রস্তুতি কবে শুরু করবেন?

রুক্মিণী: বিনোদিনী আমার ক্যারিয়ারের খুব গুরুত্বপূর্ণ ছবি। আর দ্রৌপদী আমার ক্যারিয়ারে স্বপ্নের চরিত্র। খুব বড় ভাবে ছবিটাকে ভাবা হয়েছে। ‘মহাভারত’-এর অংশ বলে সেভাবে কাস্টিংও করতে হবে। তাই আমরা একটু সময় নিয়ে কাজটা শুরু করতে চাই।

প্রশ্ন: অনন্ত আম্বানির বিয়েতে আপনি অতিথি। মুম্বাই যাতায়াত বাড়িয়েছেন। ‘সনক’ আর ‘ক্র্যাক’-এর পর নতুন কোনো খবর?

রুক্মিণী: (হেসে) এখন ‘টেক্কা’ নিয়েই ব্যস্ত। মাঝে বলিউডের বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি পর পর শুটিংয়ের জন্য রাজি হতে পারিনি। নতুন কোনো খবর হলে যথাসময়ে সবাই জানতে পারবেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম