‘শাস্ত্রী’ সিনেমায় মিঠুনের কোলে পা, যা বললেন রজতাভ
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
পূজায় মুক্তি পাচ্ছে মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ছবি ‘শাস্ত্রী’। সম্প্রতি ছবির ট্রেলার প্রকাশ্যে এসেছে। আর মিঠুনের বিপরীতে খলঅভিনেতা হিসেবে অভিনয় করেছেন টালিউডের শক্তিমান অভিনেতা রজতাভ দত্ত। শাস্ত্রী ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তীর কোলে পা তুলে শট দিলেন এ খলঅভিনেতা। এরপর আনন্দবাজার অনলাইনে শেয়ার করে এ ছবির দৃশ্যটির অভিজ্ঞতা ও অতীত স্মৃতি রোমন্থন করলেন রজতাভ দত্ত।
আনন্দবাজার সূত্রে জানা যায়, ট্রেলারের একটি দৃশ্যে দেখা যায়, নিরাপত্তারক্ষীর পোশাকে মিঠুন, উল্টো দিকে বসে আছেন রজতাভ। একসময় বর্ষীয়ান অভিনেতার কোলে দুই পা তুলে দিয়েছেন তিনি। ট্রেলার প্রকাশেই মানুষের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করেছে ‘শাস্ত্রী’। পুরোনো চেনা অবতারে দেখা যাচ্ছে মিঠুনকে। সঙ্গী দেবশ্রী।
ট্রেলারের শেষে পরিস্থিতি উল্টে যাচ্ছে একেবারে। সেখানে রজতাভের দুই কাঁধে শোভা পাচ্ছে মিঠুনের পা। মিঠুনের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক রজতাভের। ওই দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে যে প্রথমে কুণ্ঠা বোধ করেছিলেন, সে কথা স্বীকার করে নিলেন এ খলঅভিনেতা। তিনি বলেন, একটু অস্বস্তি হয়েছিল বইকি। কিন্তু চিত্রনাট্যে এমনই ছিল। মিঠুন দাকে সেটা জানাতেই বললেন, আরে, চল তো, শট দে।
রজতাভ বলেন, বাণিজ্যিক ছবিতে দর্শকদের মন জয় করার জন্য কিছু ফর্মুলা মানা হয়। তিনি বলেন, পরে যখন মিঠুন দা আমার কাঁধে পা তুলে দিচ্ছেন, ওই দৃশ্যে সবচেয়ে বেশি হাততালি পড়বে প্রেক্ষাগৃহে। এরই সঙ্গে রজতাভ যোগ করে বললেন, ওই দৃশ্যের পর মিঠুন দার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলাম।
ব্রাত্য বসু পরিচালিত ‘রাস্তা’ ছবিতে মিঠুন ও রজতাভ প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন। তবে মিঠুনের সঙ্গে অভিনেতার বাণিজ্যিক ছবিগুলোই দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়। নায়ক মিঠুন ও খলঅভিনেতা রজতাভ— বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় জুটি। এই জুটির প্রথম ছবি ছিল ‘বারুদ’। রজতাভের কথায়, আমি তখন নতুন। প্রথম খলঅভিনেতা। আমার ধারণা— আমাকে নির্বাচনের নেপথ্যে মিঠুন দার বড় অবদান ছিল। যদিও তিনি জানালেন— ‘শাস্ত্রী’র সেটে মিঠুনকে সে কথা জিজ্ঞাসা করতে অভিনেতা জানান, পুরোনো স্মৃতি তার আর মনে নেই।
রজতাভ বলেন, সাধারণত এ রকম ক্ষেত্রে অনেকেই হয়তো কৃতিত্ব নিতে চাইবেন। কিন্তু মিঠুন দা সরল মনেই বলে দিলেন যে তিনিই আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন কিনা, সেটা আর মনে করতে পারছেন না।
শুরুর দিন থেকেই মিঠুনের কাছে অভিনয় শেখার সুযোগ পেয়েছেন। অভিনেতা হিসেবে এটা তার বিশেষ প্রাপ্তি বলেই মনে করেন রজতাভ। ‘বারুদ’ ছবির একটি ঘটনার কথা তার মনে পড়ে। একটি ‘অবাস্তব’ দৃশ্যে কীভাবে শট দেবেন বুঝতে পারছিলেন না রজতাভ। মিঠুন নাকি মজা করে তাকে বলেছিলেন—বেশি থিয়েটার করলে এ অবস্থাই হয়। একই সঙ্গে সমস্যার সমাধানও করে দেন মিঠুন দা।
রজতাভ বললেন, প্রথমে দৃশ্যটার সংলাপ মুখস্থ আছে কিনা, জানতে চাইলেন দাদা। তার পর আমার চরিত্রে দাদা এবং আমি দাদার চরিত্রে— এভাবেই একবার রিহার্সাল করে দেখিয়ে দিলেন। সারাজীবনে ওই একবারই ফ্লোরে কেউ আমাকে অভিনয় দেখিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর থেকে বাণিজ্যিক ছবির চরিত্রকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সেটি আয়ত্ত করে নিই।
রজতাভ বলেন, মিঠুন দা নিজে অভিনয়ের বিশ্বকোষ। ‘মহাগুরু’র সঙ্গে তার অজস্র স্মৃতি। তিনি হেসে বললেন, সেই মানুষটার কোলে পা তুলে দিচ্ছি ভেবেই মনের মধ্যে একটা দ্বিধা কাজ করছিল। শেষ পর্যন্ত মিঠুন দাই বিষয়টাকে সহজ করে দেন। ‘শাস্ত্রী’ ছবিতেই একটি দৃশ্যে মিঠুনকে মিষ্টি খেতে হয়। তার জন্য পরে অভিনেতার শরীরও খারাপ হয়।
রজতাভ বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করতেই মিঠুন দা বলেছিলেন— কী করব! শটে তো প্রয়োজন। সত্যিই মানুষটার থেকে এ রকম অজস্র জিনিস শেখার সুযোগ পেয়েছি।
রজতাভ জানালেন, তিনি জানেন অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে মিঠুন বিভিন্ন জায়গায় তার প্রশংসা করতেন। তার কাছে এটা যে কোনো পুরস্কারের চেয়ে কম নয়, তা জানাতে দ্বিধা করেন না রজতাভ।
‘রহমত আলি’ মুক্তির ১৪ বছর পর আবার দুজনে ‘শাস্ত্রী’ ছবিতে কাজ করছেন। রজতাভ বললেন, মনে আছে— একটা ছবিতে আমাকে কয়েক লাইন লিখে দিয়েছিলেন মিঠুন দা। এখনো যত্ন করে রেখে দিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে নানা অনুষ্ঠানেও আমাদের দেখা হয়। দাদা সুস্থ থাকুন— এটাই চাই।