হায়রে অরুণা বিশ্বাস, শাস্তি কাদের ভাগ্যে জোটে এখন দেখার পালা: এলিনা
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৮ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিনোদন জগতের শিল্পীরা দুভাগে বিভক্ত ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। আবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলিও চালিয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর। এতে বহু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের তারকাদের একটি অংশ প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি রাজপথে নেমেও আন্দোলন করেছেন।
আবার বিপক্ষ তারকাদের একটি অংশ হোয়াটসঅ্যাপের ‘আলো আসবেই’ নামে একটি গ্রুপ খুলে আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন এবং গরম পানি ঢালার কথাও বলেছেন।
সম্প্রতি সেই গ্রুপের ১৪৬টি স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে নেটিজেনদের ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
সেই গ্রুপের একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আসা অভিনেত্রী এলিনা শাম্মীর একটি পোস্ট তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। যাতে এলিনার ভাষ্য ছিল, অর্থের বিনিময়ে বাবা-মাকে সন্তান হারানোর শোক ভোলানো যায়? তবে এতকিছু পেয়েও আজ আপনি কাঁদেন কেন?
এলিনা পোস্টটি করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে। কারণ, স্বজন হারানোর বেদনার কথা তুলে ধরে বেশ কয়েকবার জাতির সামনে কান্নার ভঙ্গি করেছেন তিনি। আর সেটিই হয়ত পরোক্ষভাবে বোঝাতে চেয়েছিলেন এলিনা।
এলিনার সেই পোস্টটি শেয়ার করা হয় ‘আলো আসবেই’ নামে সেই গ্রুপে। সেটি শেয়ার করেন অরুণা বিশ্বাস। আর এলিনার সেই পোস্টটি দেখেই রাগ ও ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় সেই গ্রুপের সদস্যদের। সেই ফাঁস হওয়া কথোপকথের ওই অংশ নজরে আসে এলিনা শাম্মীর।
সে প্রসঙ্গে এক ফেসবুক পোস্টে এলিনা লিখেছেন, ‘যদি ৫ আগস্ট না আসতো, যদি দেশ স্বাধীন না হতো, আজ আমার অথবা আমাদের কী পরিণতি হতো জানি না। হায়রে অরুণা বিশ্বাস, আপনি আমার পছন্দের শিল্পী ছিলেন; আমিও আপনার স্নেহভাজন ছিলাম। কল দিলে কত মনের কথা বলতেন আমিও সমানভাবে মন খুলে গল্প করতাম। অথচ ছাত্র আন্দোলনের সময় দেওয়া স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট নিয়ে আপনাদের গ্রুপের মধ্যে দিয়ে দিলেন। কী চাচ্ছিলেন? আমাকে ধরে নিয়ে আয়নাঘরে রাখুক, নাকি সরাসরি গুলি করে দিক?’
এলিনা আরও লেখেন, ‘অন্যের জন্য কুয়া খুড়লে সেখানে নিজেকেই পড়তে হয়। এত নিষ্ঠুর কেন আপনি/আপনারা? শুধু ছাত্রদের পক্ষেই তো থাকতে চেয়েছি, তাদের গুলি করে পাখির মতো মেরে ফেলছিল আপনাদের ফ্যাসিস্ট সরকার, সেই প্রতিবাদই তো করেছি, তাই স্বৈরাচারের দোসরেরা মিলে স্ক্রিনশট জোগাড় করে জমা করছিলেন শাস্তি দেবেন বলে? শাস্তি কাদের ভাগ্যে জোটে সেটাই এখন দেখার পালা।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও সংসদ সদস্য ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়। ওই গ্রুপে আওয়ামীপন্থি শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন।
সেই তালিকায় ছিলেন অরুণা বিশ্বাস, সুবর্ণা মুস্তাফা, ফেরদৌস, সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, রিয়াজ আহমেদ, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এসএ হক অলীক প্রমুখ।