শিল্পীদের ন্যায্য রয়্যালিটি আদায় নিয়ে পরামর্শ সভা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০২:৪৯ পিএম
গান, সংগীত প্রণেতারা নিজেদের সৃজনকর্মের কপিরাইট থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে, অযুহাতে নায্য রয়্যালিটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কীভাবে আসবে প্রকৃত সমাধান। সংগীত প্রণেতাদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, মেধাস্বত্বের বিপরীতে রয়্যালিটি আদায় ও বিতরণ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন-ওয়াইপো সিসাক, ইন্ডিয়ান পারফরমিং রাইট সোসাইটি (আইপিআরসি) কীভাবে কাজ করে, সে বিষয়ে দিনভর নানা সেশনে পরামর্শ পেলেন দেশের সংগীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও কম্পোজাররা।
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল সিক্স সিজনে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী ‘কপিরাইট ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সংস্থাসমূহের পরিচালনায় ওয়াইপো মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’-এ সংগীতশিল্পীদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে আলোচনা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংগীতশিল্পীদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের একমাত্র কালেকটিভ ম্যানেজমেন্ট অর্গানাইজেশন (সিএমও) বিএলসিপিএসকে সক্রিয় করারও কথা উঠে আসে এ অনুষ্ঠানে।
এদিন সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএলসিপিএসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হামিন আহমেদ, ওয়াইপোর কপিরাইট ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রোগ্রাম কর্মকর্তা মিয়ুকি মোনরোইং ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার দাউদ মিয়া। বিভিন্ন সেশনে অংশ নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন রাখেন দেশের প্রবীণ-নবীন শিল্পীরা।
এতে উপস্থিত ছিলেন কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার, নকীব খান, শহীদ মাহমুদ জঙ্গি, হামিন আহমেদ, ফোয়াদ নাসের বাবু, মাকসুদুল হক, সুজিত মোস্তফা, মানাম আহমেদ, শওকত আলী ইমন, প্রিন্স মাহমুদ, শেখ মনিরুল ইসলাম টিপু, বালাম, তরুণ, অর্ণব, কাজী ফায়সাল আহমেদ, জন, জুয়েল মোর্শেদ, কাজী আশেকিন সাজু, জয় শাহরিয়ার, লাবিক কামাল গৌরব, হৃদয় খান, ফারশিদ আলম, জামশেদ, একে রাহুল, মার্ক ডন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগীতশিল্পী আলিফ আলাউদ্দীন।
শুরুতে ওয়াইপোর কপিরাইট ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার মিয়ুকি মনরুইন ‘স্থানীয় সিএমওর প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য কালেকটিভ ম্যানেজমেন্ট এবং নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ওয়াইপোর কার্যক্রম’ শীর্ষ সেশন পরিচালনা করেন।
দ্বিতীয় সেশনে ‘বিশ্বজুড়ে সংগীত প্রণেতাদের নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিনিধিত্ব করা এবং কার্যকরভাবে সংগীত প্রণেতাদের কাছে রয়্যালটি প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য সিস্যাকের ভূমিকা ও উদ্যোগসমূহ’ নিয়ে আলোচনা করেন এশিয়া-প্যাসিফিক সিস্যাকের আঞ্চলিক পরিচালক বেঞ্জামিন এনজি।
তৃতীয় সেশনে ‘সংগীত প্রণেতা এবং সংগীতের শ্রোতা বা ভোক্তাদের জন্য একটি সৃজনশীল ইকোসিস্টেম তৈরিতে স্থানীয় সিএমওগুলোর ভূমিকা: সিএমওগুলো আপনার প্রতি কী অবদান রাখতে পারে—এ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন সিস্যাকের সন্তোষী ওয়াতানাবে, আইপিআরএসের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার রাকেশ নিগাম ও চিফ ইনফরমেশন অফিসার সুরিত ভট্টাচার্য।
বাংলাদেশে কপিরাইট এবং রিলেটেড রাইটসের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতে সংগীত প্রণেতা এবং সৃজনশীল শিল্পকে সমর্থন করার জন্য বিএলসিপিএস যেসব সহযোগিতা দিতে পারে।
সর্বশেষ সেশনে বিএলসিপিএসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হামিন আহমেদ সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং বিএলসিপিএসের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
এ সময় রেডিও, টেলিভিশন, ক্যাসেট-সিডি, বিভিন্ন প্রকার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, টেলকো, কনসার্ট ও মিউজিক্যাল ইভেন্টসহ নানা মাধ্যমে গান বা সংগীতকর্মের কপিরাইট এবং রয়্যালিটি কীভাবে নির্ধারণ হবে, আদায় হবে, নিয়ম অমান্য করলে শাস্তি কী— এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে সংগীত প্রণেতাদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, মেধাস্বত্বের বিপরীতে রয়্যালটি আদায় ও বিতরণ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বাংলাদেশের একমাত্র সিএমও হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ লিরিসিস্ট, কম্পোজার্স অ্যান্ড পারফরমারস সোসাইটি (বিএলসিপিএস)।