বাংলার গায়েনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ: শাহরিন সুলতানা মিম
বিনোদন প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:৫৯ পিএম
গল্পটি ক্যাম্পাসের সুরের। দিন যায় গানে গানে। সময়টা ২০১৯ সালের অক্টোবর। বাদ্যযন্ত্রহীন বন্ধুদের টেবিল থাপড়ানোর তালে খালি গলায় গেয়েছিলেন ‘এক চক্ষেতে হাছন কান্দে; আরেক চক্ষে লালন/গুরু তোমার বিরহে জ্বলে আমার বুকের আগুন।’
বাদ্যযন্ত্রহীন খালি গলা গাওয়া এ গানটি ভাইরাল হয়। এ ভাইরাল পরিবর্তন করে দেয় জীবনের মোড়। গান হৃদয়ের গভীরে লালন করতেন কিন্তু বড় কোনো স্বপ্ন তার ছিল না। স্বপ্ন না থাকলেও তার মেধা ছিল, কণ্ঠে ছিল যাদু। এই ভাইরাল স্মৃতি বহুদূরে যাওয়ার সাহস জোগায়।
বলছিলাম লালনকন্যা শাহরিন সুলতানা মীমের কথা।
বর্তমান সময়ে কিছু তরুণ হৃদয়ে কণ্ঠে ধারণ করছেন ফোকগান। ফোকগানের হাত ধরেই দূরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। অনেকেই নিজের মেধার পরিচয় প্রমাণ করেছেন। প্রতিশ্রুতিশীল এমন তরুণ কণ্ঠ যোদ্ধাদের মধ্যে লালনকন্যা শাহরিন সুলতানা মীম অন্যতম। মানুষের জীবনে অনেকবার সকাল আসার দরকার নেই। আলোকিত একটি সকাল হাজার সকাল এনে দেয়। মীমের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। তার অজান্তে একটি সকাল এসেছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে।
সেই থেকে গানের হৃদয়ে হৃদয় রেখে হাঁটছেন দূরে, বহুদূরে যাওয়ার প্রত্যয়ে। ফোক গান করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মীমের। সবকিছুর অন্তরালে থাকে যুদ্ধের গল্প।
গান নিয়ে বেড়ে ওঠার গল্প শুনতে চাইলে মীম শুরুর গল্প বলেন, ‘আব্বুর কাছে ঘুমানোর সময় ছোটবেলা থেকেই গান শুনতাম। আম্মুও গুনগুন করে ছড়াগান শেখাতেন। স্কুলের বার্ষিকক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নাম দিতাম প্রতিবার, পুরস্কারও পেতাম ২য় বা ৩য়। ক্লাস থ্রিতে যখন পাঁচমিশালি গানে কিরণ রায়ের ‘গাছের মূল কাটিয়া’ গানটি গাইলাম, অনেক প্রশংসাও পেলাম। কিন্তু প্রথম হতে পারলাম না। খুবই কষ্ট পাই আমি। তারপর জেদ পেয়ে বসল। জেদ থেকেই একদম হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করি। এর পর থেকে স্কুলে সবসময় গানে প্রথমই হয়েছি।’
মানুষের ভালোবাসায় মীম বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। তিনি এই স্বপ্নের পরিধি আরও প্রসারিত করতে যুক্ত হন আরটিভির তুমুল জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন সিজন-২’তে। মীমের মেধামনন দিয়ে ফাইনালিস্টে স্থান দখল করেন। পেছনের সবকিছু পুঁজি করেই তার এই গানযুদ্ধ। মীমের গানজীবনে আরটিভি আরেক অধ্যায়, যা তাকে একটা প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। বাংলার গায়েন সিজন-২ এর পরে মীমের প্রথম ঈদ। বাংলার গায়েন শেষ করার পর এক বছরের জন্য যুক্ত হয়েছেন আরটিভিতে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদে তারা আয়োজন করেছে গানের বিশেষ অনুষ্ঠান ‘স্টুডিও বাংলার গায়েন’।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মীম বলেন ‘আরজু আহমেদের প্রযোজনায়, ইমন সাহার মিউজিক কম্পোজিশানে আরটিভির ঈদ অনুষ্ঠান স্টুডিও বাংলার গায়েনের শুটিং শেষ করেছি বেশ আগেই। আশা রাখি এ অনুষ্ঠানটি দশর্কের গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’
জীবনের উত্থান-পতনেও গান ছাড়েননি মীম। তার স্বপ্ন শুধুই গান নিয়ে। লোকগান জীবনের কথা বলে লোকগানকে ছড়িয়ে দিতে চান সর্বত্র। অর্জন নয়, একজন প্রকৃত শিল্পীকে কাজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। বিশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি বুকে লালন করে লালনকন্যা মীম এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা মীমের গানপাগল ভক্তদের।