Logo
Logo
×

বিনোদন

এবার মামুনুর রশীদ ইস্যুতে মুখ খুললেন শাহনাজ খুশি

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩, ০২:০৮ পিএম

এবার মামুনুর রশীদ ইস্যুতে মুখ খুললেন শাহনাজ খুশি

নাট্যজন মামুনুর রশীদের বক্তব্যে ঝাঁকুনি দিয়েছে সংস্কৃতিমনাদের মধ্যে। হিরো আলমকে নিয়ে এমন মন্তব্যের জন্য তীর্যক মন্তব্যও শুনতে হচ্ছে তাকে। অনেকে আবার তার পাশে দাঁড়িয়েছেন।

এ বিষয়ে এবার মুখ খোলেছেন নাট্য অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

যা হুবহু তুলে ধরা হলো—
একটা উপজেলা শহর থেকে যখন ঢাকায় এসেছি, ঢাকার নানান অঙ্গনের মানুষকে দেখেছি। তারা কোনো না কোনোভাবে আমার চেয়ে সমৃদ্ধ! একটা চায়ের কাপ ধরা, একটা সভাস্থলে নীরবতায় বসা, একটা কথা শুরু করার ম্যানারস সব শিখতে হয়! এগুলো পাঠ্যবইয়ের মতোই অতীব গুরুত্বপূর্ণ! থিয়েটারে যুক্ত হয়েছি, দেখেছি এ এক শিক্ষার সাগর। সেখানে শুধু নাটক শেখানো নয়, দেশ তথা দেশের বাইরের প্রখ্যাত গুণীজনের জীবনবৃত্তান্ত, সংগ্রাম, জীবনের সৌন্দর্য নিয়ে চলেছে বিস্তর আলাপ! দিনরাতের কোনো হিসাব থাকে না…

প্রতিমুহূর্তে গ্রহণ করেছি সেই বিদ্যালয় থেকে। এসব কিছু জানতাম না কেন সে লজ্জায় নত থেকেছি। জানতে পারার গৌরবে বিনয়ী হয়েছি! জীবনের পরিমিতিবোধ শিখেছি, যে পরিমিতিবোধ সব চরিত্র রূপায়ণে বড় বোধের জোগান দিয়েছে। বিনীত করেছে সৃষ্টির পায়ে!

যা আমি জানি না, তা শেখার জন্য জানা মানুষের অপেক্ষা করেছি প্রেমের মতো করে।

এখন কিছু জানার দরকার হয় না মামুন ভাই! কিছু না জানা মানুষগুলো, জানা মানুষকে হিংসাত্মক প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলছে। সে প্রতিপক্ষের জিঘাংসা কত নোংরা হতে পারে, তা আজ দুদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, যা বাকরুদ্ধ করে দেয়?!

মামুন ভাই, আপনার হাতে তৈরি এ সংস্কৃতি অঙ্গন আলোকিত করা কত শিল্পী! কত না জানার জন্য, ভুলের জন্য আপনি সবাইকে বকেছেন, রাগ করেছেন! সে জন্য কেউ হয়তো থিয়েটারে আসেনি, অভিমান করেছে, দল ভেঙে নতুন দলও তৈরি হয়েছে, কিন্তু এই কুৎসিত এবং উদ্ধত্যপূর্ণ বিমাতাসুলভ কথা কি কখনো শুনেছেন?! 

হলভর্তি মানুষের মুহুর্মুহু করতালি পেয়েছেন, শহীদ মিনারের পাদদেশে অসীম নীবরতায় আপনার বক্তব্য শুনেছে মানুষ, সব অসামঞ্জস্য নিয়ে সরকারের প্রতিও কত তীক্ষ্ণ বক্তব্য প্রকাশ করেছেন, কিন্তু কখনো কী এমন অসভ্য মন্তব্য শুনেছেন?! শুধু রুচির নয়, বিবেকের বিকলাঙ্গতা কতটা, তা কি আর বলবার দরকার আছে?!

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের তুখোড় আপনাকে টিকটকের ভাঁড় জনকদের তুলনায় দাঁড় করিয়েছে যারা, তারাও তারই অনুসারী! শিল্প দিয়ে শিল্পীর প্রতিযোগিতা করা যায়, যাদের সে সঞ্চয় নাই, তারাই নীচতায় হরিলুট শুরু করে। সুন্দর কিছু শুরুর আগে কুৎসিত কিছু কালক্ষেপণ হয়, এটা নিশ্চয়ই তেমন সময়। বাংলাদেশের এত সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ধারক, বাহক অথবা উদাহরণ নিশ্চয় এরা হতে পারে না!!

যারা আপনার ব্যক্তিজীবন অতি কথ্য দিয়ে আপনাকে হেয় করতে চেয়েছে, সেটি তাদের দীনতা ও ব্যর্থতার আক্রোশ!

শিল্পী ও শিল্পকে মোকাবিলা করতে শৈল্পিক, কথা, যুক্তি, আচরণই লাগবে— এটি তারা জানে না। তাদের এ দীনতাকে ক্ষমা করবেন আপনি। ভাগ্যিস আপনি কোনো সরকারি মন্ত্রণালয়ে, টিভি চ্যানেলে, কোনো সরকারের আনুক্যলের প্রতিষ্ঠানে নাই এবং কোনো দিন ছিলেনও না। যদি সেটা থাকতেন, তা হলে কি বলত এই মন্তব্যকারীরা?!

৭০ ঊর্ধ্বে প্রায় ৮০-এর কাছাকাছি একজন নাট্যপ্রাণ মানুষ, যে তার একটা জনম বিলিয়ে দিয়েছে নাটক ও শিল্পের জন্য। বিনিময়ে উল্লেখ করবার মতো কিছুই নেয়নি কখনো! এখনো এই বয়সে তাকে সংসারের জন্য অভিনয় করতে হয়, লিখতে হয়, এই শিল্প থেকে কিছুই সঞ্চয় করেনি বলেই, তার অসুস্থতায় আমরা তার শিল্প সন্তানরা তার হাত ধরে তার পাশে দাঁড়িয়ে যাই, তার তুলনা এবং মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে এ কোনো অশৈল্পিক দুর্বৃত্ত অন্ধকার? আমাদের কবে, কোন মোহে এত বিবেক এবং রুচির বিকালঙ্গতা হলো? আপনার সন্তানদের আপনি বরাবরের মতো, নিজ গুণে ক্ষমা করবেন মামুন ভাই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম