একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতুল্লাহ রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে তাকে গত পাঁচ দিন ধরে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
তার মেয়ে বিজরী বরকতুল্লাহ এ তথ্য জানিয়েছেন। এক ফেসবুক পোস্টে মায়ের শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিজরী লিখেছেন, বিভিন্ন টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রত্যেক বেলায় আম্মার শারীরিক অবস্থার অদলবদল হচ্ছে। এই ভালো তো এই খারাপ।
প্রথম দিকে 'কিছুটা ভালো' শব্দটি শুনলে খুব খুশি হয়ে যেতাম, কিন্তু এখন অতটা খুশি হতে পারি না। কেন যেন মনের মধ্যে ভয় ও শঙ্কা কাজ করে—আবার না জানি কী সংবাদ শুনতে হবে।
বিজরী জানান, এখন জিনাত বরকতুল্লাহর শরীরে জ্বর রয়েছে, অক্সিজেন চলছে। এর আগেও দুবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন জিনাত বরকতুল্লাহ।
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় ‘লাইফসাপোর্টে’ নেওয়া হয়েছিল তাকে। বছর দুয়েক আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকেই তার ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটেছে, তিনবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটেছে।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় নৃত্যচর্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জিনাত বরকতুল্লাহ।
ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি—উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় নৃত্যের তিন ধারায় তালিম নিলেও লোকনৃত্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে জিনাত বরকতুল্লাহ যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে। পরে তিনি শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি ২৭ বছর কর্মরত ছিলেন।
১৯৮০ সালে জিনাত বরকতুল্লাহ বিটিভির নাটক ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ দিয়ে অভিনয়জীবন শুরু করেন। এর পর ‘ঘরে বাইরে’, ‘অস্থায়ী নিবাস’, ‘বড় বাড়ি’, ‘কথা বলা ময়না’সহ বেশ কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় করেন তিনি। জিনাত বরকতুল্লাহ নৃত্যশিল্পে অবদানের জন্য ২০২২ সালে একুশে পদক পেয়েছেন।