বাজার নিয়ন্ত্রণে বিকল্প বাজার সৃষ্টি করা হচ্ছে: উপদেষ্টা
ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০১ পিএম
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ না হওয়ার পেছনে বড় সমস্যা হচ্ছে সিন্ডিকেট সমস্যা। ঢাকাসহ বড় বাজারগুলোতে এই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিকল্প বাজার সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অনুসন্ধান করে দেখা যায়, উৎপাদন থেকে ক্রেতা পর্যন্ত যেতে কয়েক দফা হাতবদলের ফলে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বিকল্প বাজারের মধ্য দিয়ে পণ্যের হাত বদল বন্ধ হবে। আর এর সুফল পাবেন ক্রেতারা। বাজার সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
মঙ্গলবার ভোলার শিবপুর মেঘনা নদীর পাড়ে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় জেলে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ভোলায় দেশের সর্বাধিক ইলিশ উৎপাদন হয়ে থাকে। ইলিশের প্রজননের জন্য এই জেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইলিশের মধ্য দিয়ে জেলাকে আন্তর্জাতিকভাবে জানা ও চেনার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বিগত দিনে এ জেলা অবহেলার শিকার হয়েছে। দেশব্যাপী ইলিশ উৎপাদনের তিন ভাগের একভাগ এ জেলায় উৎপাদন হচ্ছে। ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মা ইলিশ এ জেলার নদীতে ডিম ছাড়ে। এখানেই ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন। শিগগিরই এ উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা জানান ফরিদা আখতার।
এ সময় তিনি বলেন, জেলেরা আইন অমান্য করে না। সত্যিকারের যারা জেলে তারা কখনো আইন ভাঙতে পারেন না। আইন ভাঙছেন মুনাফা ব্যবসায়ীরা। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভোলায় এসে মেঘনা নদী ও জেলে পল্লী পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ইলিশ প্রজননের মৌসুম ও মা ইলিশের ডিম ছাড়া নিশ্চিত করতে ২২ দিন নদীতে মাছ ধরা, মাছ বিক্রি ও সংরক্ষণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এই ২২ দিনের জন্য জেলেদের ২৫ কেজি হারে চাল দেওয়া হয়। চালের পাশাপাশি তাদের নিত্যপণ্য ক্রয়ের জন্য কিছু টাকা দেওয়ার দাবি জানান জেলেরা। বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও জানান মৎস্য উপদেষ্টা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব জানান, ভোলা জেলায় জেলের সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার রয়েছে। ইতিমধ্যে ১ লাখ ৬৮ হাজার জেলে নিবন্ধিত হয়েছে। এবার ১ লাখ ৪০ হাজার ৯শ জেলের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভোলার সব জেলের জন্য সমান হারে সরকারি সুবিধা প্রদানের দাবি জানান তিনি।
এ সময় তিনি জানান, ভোলা জেলায় ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে।
শিবপুর মেঘনা নদীর পাড়ের বালুর মাঠে জেলা মৎস্য বিভাগের আয়োজনে জেলে সমাবেশে জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হয়দার, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান, কোস্টগার্ডে দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার মোহাম্মদ শাহীন মজিদ, নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবু বকর সিদ্দিক, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব, জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ, জেলে সমিতির নেতা মো. বশির মাঝি।
সমাবেশে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের জেলে ও স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেন।