ফাইল ছবি
না লিখে পারলাম না। ১৮ নভেম্বর রাত সাড়ে দশটায় শারজাহ হয়ে আজারবাইজান আমার ফ্লাইট। তিন ঘন্টা আগেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাই। বোডিং কার্ড নিয়ে ইমিগ্রেশনে যাই, তখন বাজে রাত সাড়ে আটটা। ইমিগ্রেশনে প্রায় আধ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর একজন কর্মকর্তা ডেকে নিয়ে আমার পাসপোর্ট, ভিসা দেখে বললেন- আপনার ভিসা চেক করিয়ে নিয়ে আসতে হবে। দেখিয়ে দিলেন এক কোনায় দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি কম্পিউটার নিয়ে বসে আছেন, সেখানে যেতে।
সেখানে যাবার পর প্রথমে একজন আমার আজারবাইজানের ভিসা নিয়ে চেক করে জানালেন, কম্পিউটারে আপনার ভিসা দেখাচ্ছে না। তিনি ফোন করে আরেকজনকে আনলেন। তিনি কয়েকবার চেষ্টা করে জানালেন- ভিসা দেখা যাচ্ছে না। আমার ভিসা নাকি জাল। আমি কোথায় যাবো? কেন যাবো? কোন, কোন, দেশে আগে গিয়েছি ইত্যাদি। কপ সন্মেলনে সবাই আগে গেছে, আমি কেন পড়ে যাচ্ছি? নানা প্রশ্ন।
আমি বললাম এটা ই-ভিসা, অনলাইনে আবেদন করে আনতে হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন- যারা আমাকে বোডিং পাস দিয়েছে তাদের কাছে। পরে মাঝপথ থেকে আবার পেছনে ফিরে এসে বললেন- আপনি বসেন, আমি আপনার ভিসা পাসপোর্ট নিয়ে ভিতরে স্যারের সঙ্গে কথা বলে আসছি। তখন ঘড়িতে রাত পৌনে দশটা বাজে। আমি ইমিগ্রেশনে বসে রইলাম। ভাবছিলাম আর হয়তো কপে যাওয়া হচ্ছে না। এরই ফাঁকে আজারবাইজানে থাকা এক সাংবাদিককে জানালাম ঘটনা। তিনি তার ভিসার কপিটা আমার হোয়াটসআপ-মেসেঞ্জারে পাঠালেন। দেখলাম, ভিসার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই।
এদিকে রাত সোয়া দশটার দিকে ওই কর্মকর্তা একজনকে পাঠালেন আমাকে ডেকে নিতে। আমি ভিতরে তাদের অফিসে যাবার পর পাসপোর্ট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, আপনাকে আমরা যেতে দিচ্ছি, কিন্ত আপনার ভিসা দেখা যাচ্ছে না। ওই খানে কোনো সমস্যা হলে আমরা জানি না। পরে পাসপোর্ট নিয়ে আবার ইমিগ্রেশনে গিয়ে কাজ শেষ করে কোন রকম বোডিং গেইটে যাই। এরই মধ্যে এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ আমার বিষয়টি জানতে পেরে তারা অপেক্ষা করছিলো। আমি যাওয়া মাত্র দ্রুত চেক শেষে পাঁচ মিনিট আগে বিমানে উঠার সুযোগ করে দেয়। বিমানে বসে ভাবছিলাম, আজারবাইজান এয়ারপোর্ট থেকে মনে হয় ফেরত আসতে হচ্ছে। যাই হোক আজারবাইজান এয়ারপোর্টে পৌঁছার পর আশ্চর্য হলাম- তাদের ব্যবহার দেখে। কপে আসা ব্যক্তিদের ঘিরে অভ্যর্থনা দেখে অবাক হয়ে যাই। ওই খানে ইমিগ্রেশনে শুধু আমার পাসপোর্ট নিয়ে স্ক্যানিং করে একটা সিল মেরে ছেড়ে দিলো। ভিসা, অন্য কোনো কাগজপত্র দেখলো না। সেখানে আমার পাসপোর্ট স্ক্যানিং করার সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু তাদের কম্পিউটারে চলে আসে। দশ মিনিটের মধ্যে সকল কাজ শেষ করে এয়ারপোর্ট থেকে কপের ফ্রি সার্ভিস শাটল বাসে সন্মেলন স্থলে যাই।
এই হলো বিভিন্ন দেশের এয়ারপোর্টের সেবা। আর আমরা এখনো কোথায় আছি?