ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা
নারীদের পছন্দ জয়িতার পণ্য
যমুনার পণ্য ‘কিনলেন তো জিতলেন’
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
রাজধানীর সাঁতারকুলের নাসরীন সুলতানা রুনা। পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এসেছেন দুই মেয়ে নিয়ে। কেনাকাটা করছিলেন জয়িতা প্যাভিলিয়নে। তিনি বলেন, প্রতিবছরই মেলায় আসি। জয়িতা থেকে পণ্য কিনি। গ্রামীণ নারীদের হাতে তৈরি পণ্যের মান ভালো, তুলনামূলক কম দাম। অন্যান্য বিদেশি কাপড়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে আছে।
রুনার মতো আরও অনেকে ভিড় জমিয়েছেন জয়িতার স্টলগুলোতে। বিশেষ করে নারীরা এখানে স্বচ্ছন্দে কেনাকাটা করেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিনামূল্যে নারী উদ্যোক্তাদের জয়িতা প্যাভিলিয়নে স্টল বরাদ্দ দিয়েছে। ঢাকা থেকে মেলায় আসা-যাওয়ার জন্য তাদের ফ্রি বাস সার্ভিসও দেওয়া হয়েছে। এবারের মেলায় জয়িতা ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নে ২৫টি স্টল রয়েছে। স্টলের মালিক, কর্মচারী ও কারিগর সবাই নারী। আর পণ্য বিক্রিতে খুশি নারী উদ্যোক্তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, জয়িতা ফাউন্ডেশনের স্টলে ক্রেতাদের ভিড়। নারী উদ্যোক্তা ও তাদের সেলসম্যানরা পণ্য দেখাতে ব্যস্ত। নিজেদের কারখানায় তৈরি শাড়ি, টু-পিস, ওয়ান-পিস, থ্রি-পিস, ওড়না, পাটের তৈরি শোভাবর্ধক জিনিসপত্র, কটি, টেবিলমেট, মাটির তৈরি শোপিস, দরজা-জানালার পর্দা, সোফার কুশন, বালিশ কভার, পিতলের তৈরি গৃহস্থালি পণ্যসহ তিন শতাধিক পণ্য রয়েছে স্টলে। এছাড়া রাজশাহী সিল্ক, কাঁসার তৈরি গৃহস্থালি পণ্য, জামদানি শাড়ি, খেলনা, বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র, পুতুলসহ নানা প্রয়োজনীয় পণ্যে ভরপুর।
স্টলের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জয়িতা স্টলে জামা ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৭০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, শাড়ি ১ হাজার ৫০০ থেকে ১৪ হাজার টাকা, ফতুয়া ৪০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, ওড়না ৫০ থেকে ৩০০ টাকা, সুতি শাড়ি ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
নারী উদ্যোক্তা ও উত্তরণ বুটিক্সের মালিক নাজনীন আক্তার মুক্তা জানান, সবাই হাতের তৈরি জিনিস পছন্দ করেন। তাই জয়িতার প্যাভিলিয়নে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা আসেন। এখানে গ্রামীণ নারীদের হাতে তৈরি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। নারী উদ্যোক্তা শারমীন রহমান বলেন, এবারের বাণিজ্যমেলার ব্যবস্থাপনা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা জনবান্ধব। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।
যমুনা ইলেকট্রনিক্সের বিশেষ ছাড়: যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইল লিমিটেডের হেড অব সেলস মো. মেজবাহ উদ্দিন আতিক বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মেলায় আমরা উন্নতমানের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-রাইস কুকার, রেফ্রিজারেশন, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রনিক ওভেন, গ্যাস বার্নার, কারি কুকার, ইনফ্রারেড কুকার, রুমহিটার, ভেন্ডার, মিকশ্চার ভেন্ডার ও জুসার, টিভি ও মোটরসাইকেল। এসব পণ্য আমরা বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছি।
বিশেষ করে মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশন, ওয়াশিং মেশিন আমরা ১০ থেকে ২৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত ডিসকাউন্টে অফার করেছি। মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে ২৫%। কিছু ইনোভেটিভ প্রডাক্ট আমরা এখানে নিয়ে এসেছি।
১০০ ইঞ্চি টিভি-বাংলাদেশে এই প্রথম এতবড় টিভি এনেছি। এয়ারকন্ডিশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন টেকনোলজির কিছু এয়ারকন্ডিশন আমরা নিয়ে এসেছি, সেখানেও ক্ষেত্রবিশেষ ১০ থেকে ১২% ডিসকাউন্ট আছে। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্যমেলায় যমুনার পণ্য ‘কিনলেন তো জিতলেন’!
নকল পণ্য বিক্রিতে জরিমানা : সোমবার সন্ধ্যায় ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বারের নেতৃত্বে মেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় এক দোকানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অন্য একটি দোকান বন্ধ করে দেন।
ঢাকা থেকে আসা এক দম্পতি ইলেকট্রিক মার্ট মিয়াকো ব্র্যান্ডের একটি স্টল থেকে সনি ব্র্যান্ডের একটি টেলিভিশন এবং রান্নার কাজে ব্যবহৃত পণ্য ৫৮ হাজার টাকায় কেনেন। পরে যাচাই করে দেখেন রঙিন টেলিভিশনটি নকল। তারা অভিযোগ করলে ওই অভিযান চালানো হয়। দোকান মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও একজন ভুক্তভোগী ঢাকায় জামদানি শাড়ি হাউজ নামক একটি দোকান থেকে জামদানি শাড়ি ক্রয় করেন ১৮ হাজার টাকায়। কিন্তু শাড়িটি নকল হওয়ায় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানে দোকানটি বন্ধ করে দেয়। পরে কাস্টমারের সঙ্গে সমঝোতা হলে পুনরায় দোকানটি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।