ইআরডির প্রতিবেদন
কমছে ঋণের অর্থছাড় বাড়ছে শোধের চাপ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ পিএম
বিদেশি ঋণ শোধের চাপ দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে অর্থছাড়ের পরিমাণ কমছে। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতির পরিমাণও কমছে। প্রতি মাসে যে পরিমাণ ঋণ পাওয়া যাচ্ছে, তার চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতেই যাচ্ছে।
চলতি অর্থবছরে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি দিতেও অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী- চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বিদেশি ঋণের অর্থছাড় মাত্র ১৫৪ কোটি ৩৭ লাখ ডলার হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থাৎ অর্থছাড়ের পরিমাণ কমেছে ২৭ শতাংশ। এ সময়ে ঋণের নতুন প্রতিশ্রুতি এসেছে মাত্র ৫২ কোটি ২৬ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৫৮৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার। অর্থাৎ ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯১ দশমিক ২৩ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আসা ১৫৪ কোটি ডলারের পুরোটাই ঋণ পরিশোধে খরচ হয়েছে। এছাড়া অন্য উৎস থেকে এনে ১৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার ঋণ শোধ করতে হয়েছে। এ সময়ে ১৭১ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে।
গত অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩৫ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়, যা আগের বছরের তুলনায় ৬৮ কোটি ডলার বেশি। এর মধ্যে শুধু সুদ পরিশোধে ৪১ কোটি ডলার অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ৪৫০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, উন্নয়ন প্রকল্পে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় উন্নয়ন সহযোগীরাও অর্থছাড় করতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। উচ্চ সুদের কারণে বিদেশি ঋণ শোধে বাড়তি চাপ পড়েছে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট (এসওএফআর) বেড়ে বর্তমানে ৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে, যা যুদ্ধের আগে ছিল ১ শতাংশের কম। ফলে বাংলাদেশকে বাজারভিত্তিক ঋণে উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে ইআরডির একটি সূত্র যুগান্তরকে জানায়।