Logo
Logo
×

অর্থনীতি

অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ

১৫ বছরে পাঁচটি জাতীয় বাজেটের সমান টাকা পাচার হয়েছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ পিএম

১৫ বছরে পাঁচটি জাতীয় বাজেটের সমান টাকা পাচার হয়েছে

আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই অর্থ গত ৫ বছরে দেশের জাতীয় বাজেটের চেয়ে বেশি। এ সময়ে প্রতিবছর পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। 

অর্থনীতির অবস্থা মূল্যায়নে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে অর্থ পাচারের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্টের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে রোববার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে শ্বেতপত্র সংক্রান্ত কমিটির প্রধান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য নেতৃত্বাধীন কমিটি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে দুর্নীতি হয়েছে-ব্যাংকিং খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, উন্নয়ন প্রকল্প, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে। ২৯টি প্রকল্পের মধ্যে সাতটি বড় প্রকল্প পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিটিতে অতিরিক্ত ব্যয় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যয়ের সুবিধা বিশ্লেষণ না করেই প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। 

১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। এর ৪০ শতাংশ অর্থ আমলারা লুটপাট করেছে। এ সময়ে কর অব্যাহতির পরিমাণ ছিল দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ। এটি অর্ধেকে নামিয়ে আনা গেলে শিক্ষা বাজেট দ্বিগুণ এবং স্বাস্থ্য বাজেট তিনগুণ করা যেত। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর ১০ শতাংশ অবৈধ লেনদেন ধরা হলে পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন ডলার। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্ল্যাকহোলের গভীরে ব্যাংকিং খাত। খেলাপি ঋণ ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থ পাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বিচারকাজ শুরুর সুপারিশ করেছে কমিটি। 

রিপোর্ট প্রদান অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, এটি ঐতিহাসিক দলিল। বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সমস্যাটি আমরা যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও গভীর। শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে কীভাবে চামচা পুঁজিবাদ অলিগার্কদের জন্ম দিয়েছে।

দেশের আর্থিক খাতের প্রকৃত অবস্থা মূল্যায়নে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ২৮ আগস্ট ১১ সদস্য বিশিষ্ট শ্বেতপত্র প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিটিকে যেসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো-সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বহির্খাত (আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, এফডিআই, রিজার্ভ এবং বিদেশি ঋণ), ব্যাংকিং খাতের পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব, ব্যয়, মেগা প্রকল্প, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র্য ও সমতা, পুঁজিবাজার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও জলবায়ু ইস্যু, বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান। কমিটি রোববার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম