এক মাসের ব্যবধানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ কমেছে ১৩০ কোটি ডলার। গত ৩০ জুন নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। গত ৩১ জুলাই তা নেমে এসেছে ২ হাজার ৪৯ কোটি ডলারে। অর্থাৎ আমদানি ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার পরও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিম্মমুখী যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। আইএমএফসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে বৈদেশিক ঋণ নিয়েও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিম্মমুখী প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, জুলাই মাসে রিজার্ভ বেশি মাত্রায় কমার কারণ হিসাবে রয়েছে গত মে ও জুনের মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের দেনা বাবদ ১৪২ কোটি ডলার পরিশোধ। ওই দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভ ২ হাজার ৪৬ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল। গত ৯ জুলাই ওই দেনা পরিশোধ করা হয়। এরপর থেকে গত প্রায় ২১ দিনে রিজার্ভ ৩ কোটি ডলার বেড়ে ২ হাজার ৪৯ কোটি ডলারে দাড়িয়েছে।
এদিকে গত তিন মাস ধরে রপ্তানি আয় কমছে। গত জুলাইয়েও রেমিট্যান্সে কমে গেছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুটি উৎস রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দুটিই কমেছে। এদিকে ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের পরও আমদানি ব্যয় আবার বাড়তে শুরু করেছে। আগে আমদানি প্রতি মাসে গড়ে ৫০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল। গত মে মাসে তা বেড়ে ৫০০ কোটি ডলারের ওপরে ওঠে গেছে। অর্থাৎ ৫২০ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। আমদানি ব্যয় বাড়ায় এবং রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার চাপে পড়তে পারে।
এদিকে কিছু বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ওই মেয়াদের পরে দেশের বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ আরও বেড়ে যাবে। এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হারের উর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। বড় অংকের বৈদেশিক ঋণের কোন প্রতিশ্রুতি এখনও নিশ্চিত হয়নি। ফলে রিজার্ভ আরও চাপের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ঋণমানের রেটিংকারী সংস্থা এসএন্ডপি গ্লোবাল বাংলাদেশের ঋণমান আরও এক ধাপ কমিয়ে দিয়েছে। তারা বলেছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহতভাবে কমার কারণে তারা ঋণমান কমিয়েছে। আগামীতে রিজার্ভ আরও কমে যেতে পারে বলে সংস্থাটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।