বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন
ফাইন্যান্স কোম্পানি ছেড়েছেন ৫৯ হাজার আমানতকারী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাফিক্স : যুগান্তর
ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর (সাবেক নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান) থেকে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। গত ৩ মাসে এসব কোম্পানি থেকে আমানতকারীর সংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি কমে যাচ্ছে আমানতের পরিমাণ।
এতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে তারল্য সংকট প্রকট হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা। তবে কোটিপতিদের আমানতের পরিমাণ বেড়েছে। ঋণগ্রহীতাদের সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে। ১ বছরের হিসাবে আমানত কিছুটা বাড়লে আমানতকারী কমেছে ৫৯ হাজার ২১৩ জন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি ৩ মাস অন্তর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত বছরের মার্চে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে মোট আমানতকারী ছিলেন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৫৫৪ জন। মার্চে আমানতকারীদের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৪১ জন। আলোচ্য ১ বছরে আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে ৫৯ হাজার ২১৩ জন। অর্থাৎ গত ১ বছরে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো থেকে ৫৯ হাজার ২১৩ জন আমানতকারী তাদের আমানতের অর্থ তুলে নিয়েছেন। তবে গত ১ বছরের এসব কোম্পানিতে আমানতের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
গত বছরের মার্চে মোট আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা। আলোচ্য ১ বছরের ব্যবধানে আমানত বেড়েছে ৬০৬ কোটি টাকা। এর আগে ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে আমানত ৪৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে গত ৩ মাসের হিসাবে এসব কোম্পানিতে আমানত কমেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৩০৫ কোটি টাকায়। এ হিসাবে আমানত কমেছে ৫২৫ কোটি টাকা।
এদিকে ৩ মাসের হিসাবে গ্রাহকও কমেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে মোট আমানতকারী ছিলেন ৪ লাখ ৩১ হাজার ২২১ জন। মার্চে গ্রাহক সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৪১ জনে। আলোচ্য সময়ে গ্রাহক কমেছে ৩ হাজার ৮৮০ জন।
সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কয়ক বছর আগে বড় ধরনের জালজালিয়াতি হয়েছে। এর প্রভাবে এসব কোম্পানিতে আমানত যেমন কমেছে, তেমনি গ্রাহকও কমেছে। এছাড়া অনেক ফাইন্যান্স কোম্পানি এখন আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। যে কারণে নতুন গ্রাহক কম পাচ্ছে তারা। আস্থার সংকটের কারণে আগের অনেক গ্রাহক চলে যাচ্ছেন।
দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বড় হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ছে। এ হিসাবে আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতা দুটোই বাড়ছে। ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতেও আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতা বাড়ার কথা। কিন্তু তাদের প্রতি গ্রাহকদের আস্থাহীনতার কারণে গ্রাহক কমে যাচ্ছে।
তবে এসব কোম্পানিতে ঋণগ্রহীতা ও ঋণের স্থিতি বেড়েছে। কমেছে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা। গত বছরের ডিসেম্বরে এসব কোম্পানিতে কোটিপতি আমানতকারী ছিলেন ৫ হাজার ২৮৭ চর। মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২০৪ জনে। ৩ মাসে কোটিপতি আমানতকারী কমেছে ৮৩ জন। গত বছরের ডিসেম্বরে কোটিপতিদের আমানত ছিল ২৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১২২ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে তাদের আমানত বেড়েছে ১ হাজার ২৮ কোটি টাকা।