‘মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে অভ্যন্তরীণ ২০ শতাংশ ঋণ’

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৪, ০৯:১০ পিএম

ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার যে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নেবে তা প্রস্তাবিত বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ। এত বড় অঙ্কের ঋণ মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন এফসিএ।
শনিবার প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আইসিএবি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা বলেন তিনি। কাওরান বাজারে আইসিএবি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে পেশাজীবী এই সংগঠনের সভাপতি ছাড়াও অন্যরা বক্তব্য দেন।
আইসিএবি সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির প্রশ্ন তুলেছেন, ‘শেয়ারবাজারে করসুবিধা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আত্মহত্যা ঠেকানো গেছে? ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পকেট ফাঁকা করা বন্ধ করা গেছে? আমরা কর সুবিধা দিয়ে শেয়ারবাজারের সবকিছু ঠিক করতে চাই।’তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বা মৌলভিত্তির ওপর নির্ভর করে শেয়ারবাজার চাঙা হওয়ার বিষয়। করকাঠামোর জন্য শেয়ারবাজারের এই পরিস্থিতি হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যক্তিশ্রেণির কালোটাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়টি সমর্থন করছে না আইসিএবি; আবার বিরোধিতাও করেনি সংস্থাটি। এ প্রসঙ্গে আইসিএবি সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন বলেন, ‘ব্যক্তিশ্রেণির অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত; তাই এ বিষয়ে মন্তব্য নেই। তবে আইসিএবি নৈতিকতার মান বজায় রাখার পক্ষে।’
প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার পক্ষে আইসিএবি। ফোরকান উদ্দীন আরও বলেন, কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য কর নেট সম্প্রসারণ এখন সময়ের দাবি। এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, যারা শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে নিয়োজিত, ওই সব পেশাদার এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সপ্তম তফশিলের অধীনে একই করকাঠামোর আওতায় আনা যেতে পারে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার একটি সময়োপযোগী ও ব্যাপক আকারের বাজেট সংসদে পেশ করেছেন। প্রস্তাবিত বাজেট জিডিপির ১৪.২ শতাংশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বৈশ্বিক সংকট, ডলার সংকট, ব্যবসা-বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে মন্দা এবং অন্যান্য বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা থাকা সত্তে্বও ২,৬৫,০০০ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে সরকার, যা একটি উন্নত দেশে পৌছার যাত্রায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন আইসিএবির সদস্য স্নেহাশীষ বড়ুয়া। তিনি বলেন, সরকার ব্যাংক খাত থেকে তুলনামূলক বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাত ঋণ কম পাবে। ফলে বিনিয়োগ কম হবে। এনবিআরকে যে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে, তা বিঘ্নিত হবে। তার মতে, এই বাজেটে নতুন কর হারের কারণে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের নিচের দিকের এবং ওপরের দিকের করদাতারা চাপে থাকবেন; তবে মধ্যপর্যায়ের করদাতারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।