Logo
Logo
×

অর্থনীতি

নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহক কমার নেপথ্যে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৭ এএম

নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহক কমার নেপথ্যে

নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে জাল-জালিয়াতির নেতিবাচক প্রভাব এখনো অব্যাহত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সব শ্রেণির গ্রাহক সংখ্যা কমে যাচ্ছে। গত এক বছরের ব্যবধানে আমানতধারীর হিসাব কমেছে ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। একই সময়ে ঋণ বা বিনিয়োগ হিসাব কমেছে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। তবে আলোচ্য সময়ে আমানত ও ঋণের স্থিতি কিছুটা বেড়েছে।

মঙ্গলবার নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সাল থেকে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালকরাই নিয়েছেন সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। এতে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের সংকটে পড়ে। তারা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছিল না। ফলে আমানতকারীরা বিক্ষোভ মিছিল-মিটিং করেন। এর প্রভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কমতে ছিল। তবে এখন আমানত বাড়তে শুরু করেছে। তবে গ্রাহক সংখ্যা জালিয়াতির পর থেকেই কমতে ছিল। কমার সংখ্যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে আমানত হিসাব। আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় গ্রাহকরা অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন। যে কারণে আমানতের গ্রাহক বেশি কমেছে। ঋণ বা বিনিয়োগের গ্রাহক তুলনামূলক কম কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মোট আমানত হিসাব ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার। গত বছরের ডিসেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজারে। গত এক বছরের ব্যবধানে আমানতের হিসাব কমেছে ৯১ হাজার বা ১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে ব্যক্তি আমানতের হিসাব। তবে বড়েছে উদ্যোক্তা আমানতের হিসাব। তারা একই প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়ার বিপরীতে আমানত রাখে বলে এ হিসাব বেড়েছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে ঋণ বা বিনিয়োগ হিসাব ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৯২টি। গত বছরের ডিসেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭০৫টিতে। এক বছরের ব্যবধানে ঋণ হিসাব কমেছে ৫ হাজার ৬৮৭টি বা ২ দশমিক ৫২ শতাংশ।

সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রাহক কমে যাওয়ার কারণে সংকট বাড়ছে। আমানত আগে কমছিল। এখন বাড়তে শুরু করেছে। তবে বৃদ্ধির হার খুবই কম। একই সঙ্গে নতুন ঋণ বিতরণ খুবই কম। আগের সুদ যোগ হয়ে ঋণ বেড়েছে খুবই সামান্য।

প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। এক বছরে আমানত বেড়েছে ১০৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। বৃদ্ধির হার দশমিক ২৪ শতাংশ।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিনিয়োগ ছিল ৭০ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ঋণ বেড়েছে ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা বৃদ্ধির হার দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগে আমানত ও ঋণ দুটোই আরও অনেক বেশি হারে বাড়ত। কোনো বছর তা ডাবল ডিজিটের উপরে থাকত।

আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে বেসরকারি খাতের আমানত বাড়লেও সরকারি খাতের আমানত কমেছে। বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত জমা না রাখায় সরকারি আমানত কমেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সরকারি আমানত ছিল ৪৯ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি টাকায়। আলোচ্য সময়ে আমানত কমেছে ৭ কোটি টাকা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানতের সাড়ে ৯২ শতাংশই ঢাকাকেন্দ্রিক। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ। বাকি ৩ শতাংশ অন্যান্য অঞ্চলে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম