সিপিডির আলোচনায় বক্তারা
এলডিসি উত্তরণে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ জরুরি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৮ পিএম
বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক বা গার্মেন্টস পণ্য। এ অবস্থায় আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে বের হওয়ার জন্য পণ্যের বহুমুখীকরণ জরুরি। কারণ এক পণ্যের ওপর নির্ভর করে যেসব দেশের এলডিসি উত্তরণ হয়েছে, পরবর্তীতে তারা ঝুঁকিতে পড়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলা অন্যতম উদাহরণ।
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। এ সময় তিনি বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণ হলে বাণিজ্য সুবিধা আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত থাকবে।
এবারের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তা চ‚ড়ান্ত হয়েছে। অর্থাৎ আমরা প্রস্তুতির জন্য আরও ৫ বছর সময় পাচ্ছি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, সিপিডির বিশেষ ফেলো- ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বিল্ডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম এবং ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন আবাসিক প্রতিনিধি রিচার্ড কানিওয়েস্কি।
প্রসঙ্গত, স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে বর্তমানে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বেশ কিছু বাণিজ্য সুবিধা পায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, মেধাস্বত্বের জন্য রয়্যালটি না দেওয়া এবং ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কছাড়। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণ হলে এই সুবিধা থাকবে না। তবে এবারের ডব্লিউটিওর সম্মেলনে সুবিধাগুলো আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সুবিধা, দক্ষতা বাড়াতে কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় থাকবে কি না তা পরিষ্কার নয়।
সোমবারের অনুষ্ঠানে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রস্তুতির জন্য ৩টি বছর পেয়েছি। এই তিনটি বছর সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। না হলে এই বাড়তি সময়ের জন্য কোনো লাভ নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি গার্মেন্টনির্ভর। এই তিন বছর এখানে বৈচিত্র্য আনতে হবে। রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। তিনি বলেন, উৎপাদনশীলতা, শ্রমিকের স্বার্থ, নতুন পণ্য এবং এর সঙ্গে আধুনিক বিষয়গুলো যুক্ত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আঙ্গোলার একটি রপ্তানি পণ্য ছিল, যা হলো জ্বালানি তেল। এই পণ্যের ওপর নির্ভর করে তারা এলডিসি উত্তরণ করেছে। কিন্তু যখন তেলের দাম কমল, তাদের অর্থনীতিতে বিপর্যয় হলো। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি ৫ বছরের মধ্যে আমরা গুছিয়ে নিতে পারব। তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত ও জাপান অন্যতম। তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তিতে আগ্রহী। প্রতিমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৬০টি দেশের নির্বাচন। এই নির্বাচনের পর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। আমাদের টিম সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে।