তিন দিনব্যাপী হুরাইন ফেব্রিক উইক শুরু
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে (লেভেল-৭) তিন দিনব্যাপী হুরাইন ফেব্রিক উইক শুরু হয়েছে। এবারের প্রদর্শনীতে ১৬৫ ধরনের নতুন ফেব্রিকের পাশাপাশি সাড়ে চার হাজার ফেব্রিক প্রদর্শন করা হচ্ছে, যার সবকটিই হুরাইন উদ্ভাবিত। প্রথম দিনে মার্চেন্ডাইজার ও ফ্যাশন ডিজাইনারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রদর্শনীকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
মঙ্গলবার সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হুরাইন এইচটিএফের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম ও রাজিথা।
উদ্বোধন শেষে সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম বলেন, প্রতি বছর হুরাইন এইচটিএফ দু’বার ফেব্রিক উইকের আয়োজন করে। একবার শরৎ ও শীত মৌসুম এবং আরেকবার বসন্ত ও গ্রীষ্ম মৌসুমের ফেব্রিক প্রদর্শন করা হয়। মৌসুম শুরুর ৮ মাস আগে সেই মৌসুমে ব্যবহার উপযোগী নতুন রং-ডিজাইনের হুরাইন উদ্ভাবিত ফেব্রিক সম্পর্কে ধারণা দিতে এই প্রদর্শনী, যাতে বিদেশি ক্রেতা-ডিজাইনারদের অর্ডার দিতে সুবিধা হয়।
তিনি আরও বলেন, হুরাইন বিশেষায়িত ফেব্রিক উৎপাদন করে, সচরাচর বাংলাদেশের অন্য টেক্সটাইল মিলগুলো এ ধরনের ফেব্রিক উৎপাদন করে না। আমাদের উৎপাদিত ফেব্রিক সম্পর্কে বিদেশি ক্রেতা ও ডিজাইনারদের জানাতে ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি আমরা বিদেশি প্রদর্শনীতে ফেব্রিক প্রদর্শন করে থাকি। এতে বায়ারদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। এ বছরের শেষ নাগাদ সিনথেটিক ফেব্রিক যেমন পলিয়েস্টার, নাইলন, শিফন ও জর্জেট ফেব্রিক উৎপাদন শুরু করব।
সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল হুরাইন শুধু বাংলাদেশে নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড হবে না, বিশ্ববাজারেও নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড হবে। যেভাবে আমরা ফেব্রিক উদ্ভাবন করছি, তাতে শিগগিরই আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরে অর্ডার আশা শুরু করেছে। আমরা আশাবাদী আরও বেশি অর্ডার আসবে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, জানুয়ারিতে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রণোদনা কমিয়ে দিয়েছি। সরকার যদি প্রণোদনা আগের পর্যায়ে নিয়ে যায় তাহলে সেটি টেক্সটাইল মিলের জন্য আরও বেশি সহায়ক হতো।
হুরাইনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেন, বাংলাদেশে এখন বিশ্বমানের ফেব্রিক উৎপাদন হয়। সেটি বায়ারদের জানান দিতে এ প্রদর্শনী। যদিও সরকার প্রতি বছর রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মাধ্যমে টেক্স ওয়ার্ল্ড প্যারিস প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের টেক্সটাইল মিলগুলোকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। এ ধরনের প্রদর্শনী হওয়া আরও উচিত। যেসব দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আছে, সেসব দেশে সরকার নিজ উদ্যোগে প্রদর্শনীর আয়োজন করতে পারে। সেই সব প্রদর্শনীতে টেক্সটাইল মিলগুলো ফেব্রিক প্রদর্শন করলে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশি বায়ারদের চিন্তা পালটে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক ফ্যাশনের হালচাল প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। এখন ম্যান মেইড ফাইবারের যুগ চলছে। এখানে বাংলাদেশের অফুরন্ত সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশে টেক্সটাইল মিলগুলোকে সঠিক নীতিসহায়তা দিতে পারলে এ খাতে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি আয় সম্ভব। হুরাইন এইচটিএফ সিনথেটিক ফাইবারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বছরের শেষে নতুন সেটআপ চালু করছে, যাতে বছরে সাড়ে ৪ মিলিয়ন গজ কাপড় উৎপাদন সম্ভব। হাকিম বলেন, হুরাইনের ফেব্রিক গুণগত মানসম্পন্ন হওয়ার কারণে আমেরিকা, শ্রীলংকা, নিকারাগুয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়াতে সরাসরি রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়া দেশের গার্মেন্টসগুলোর মাধ্যমে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিও হচ্ছে।
প্রদর্শনীতে আগত ফ্যাশন ডিজাইনার জান্নাতুন নাইম বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বমানের ফেব্রিক উৎপাদনে সক্ষম। অনেক টেক্সটাইল মিল ভালো ফেব্রিক বানাচ্ছে। এর মধ্যে হুরাইনের ফেব্রিকের আলাদা বিশেষত্ব আছে। হুরাইন সব সময় উদ্ভাবনীয় শক্তি দিয়ে নতুন কিছু করতে চায়। এবারও নতুন ফেব্রিক দেখতে পেয়েছি যার রং ও ডিজাইন সত্যিই দেখতে সুন্দর, হ্যান্ডফিলও ভালো।