Logo
Logo
×

অর্থনীতি

বাণিজ্যমেলায় হুর প্যাভিলিয়নে ভিড়

Icon

এ হাই মিলন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম

বাণিজ্যমেলায় হুর প্যাভিলিয়নে ভিড়

রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এর আগে আগারগাঁওয়ে শেরেবাংলা নগর মাঠে এ মেলা অনুষ্ঠিত হতো। 

বাণিজ্যমেলার ২৮তম এ আসর সরকারি ছুটির দিন ছাড়া কিছুতেই জমছে না। তবে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে যমুনা ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোবাইলস এবং ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর প্যাভিলিয়নে। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে ১ জানুয়ারির পরিবর্তে ২১ জানুয়ারি শুরু হওয়ায় বহু ব্যবসায়ী স্টল নিয়েও দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে স্টল প্রস্তুত করছেন। আর স্টল নেওয়া ব্যবসায়ীদের হাঁকডাক যেন শুনছেনই না ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। ফলে এবার ক্রেতা টানতে পারছেন না মেলার ব্যবসায়ীরা। 

সংশ্লিষ্টদের দাবি- নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের লোকজ মেলা আর ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া একুশে বইমেলার প্রভাব পড়বে বাণিজ্যমেলায়। 
মেলার অষ্টমদিনে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এবার গত ৩ বছরের তুলনায় যাতায়াত ব্যবস্থাসহ মেলার অভ্যন্তরীণ সার্বিক নিরাপত্তা ভালো। তবে সোমবার দুপুরেও বেশ কয়েকটি স্টল নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। আবার বেশ কিছু স্টলের জায়গা খালি পড়ে আছে। 

ব্যবসায়ীদের দাবি ২১ দিন পর শুরু হওয়ার প্রভাবে ক্রেতা নেই। তবে এবার ক্রেতাসাধারণ পবিত্র ঈদুল ফিতরের কেনাকাটাকে টার্গেট করেছেন এ মেলা থেকে। 

হুরের হেড অব সেলস রঞ্জন জানান-২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সি ক্রেতা আমাদের পণ্য বেশি কিনে থাকেন। ক্রেতাদের বেশি পছন্দ কুর্তি আনিসটিজ থ্রি-পিস কাপড়ের চাহিদা বেশি। ১৫ বছর বয়সি মেয়েদের টপের দিকে আকর্ষণ বেশি। হুরের কাপড় রং, প্রিন্ট নিয়ে অনেক ক্রেতাই প্রশংসা করে থাকেন। 

যমুনা প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তা রাকিব জানান ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ, হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ বেশকিছু পণ্য বিক্রি হয়েছে আজ। মিরপুর ১ থেকে মেলায় আসা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। 

তিনি জানান, ওয়াশিং মেশিন কিনেছি। অনেক ঘুরাঘুরি করে দেখলাম যমুনার এ ওয়াশিং মেশিন খুব উন্নতমানের ও ভালো। তিনি জানান-মেশিনটি তারা হোম ডেলিভারি দেবে। 

মেলায় ঘুরতে আসা রূপগঞ্জের কায়েতপাড়ার দেলোয়ার হোসেন বলেন, এবার মেলা এখনো জমেনি। লোক যেমন নেই তেমনি ভেতরের স্টলও খালি। এভাবে নিরুৎসাহিত হলে মেলার সফলতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠবে। 

অপর দর্শনার্থী ভোলাভো স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন,  এবার মেলা দেরিতে শুরু হওয়ার পাশাপাশি একুশে বই মেলার প্রভাবে রাজধানী থেকে আসা দর্শনার্থীদের সংখ্যা কমে যাবে। পাশাপাশি পাশের উপজেলা সোনারগাঁয়ে ১৬ জানুয়ারি থেকে লোকজ মেলা শুরু হয়েছে। সেখানে স্থানীয় লোকজন ভিড় করে থাকেন বেশি। তা ছাড়া বাজারের সব পণ্যের দাম বেশি। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ বিনোদন বা কেনাকাটায় খরচ করতে চায় কম। এসব কারণে এবার মেলায় দর্শনার্থী কম। তবে সরকারি ছুটির দিনে লাখো লোকের সমাগম হয় মেলায়। বিক্রিও বাড়ে সেদিন। 

মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী হাশেম অ্যান্ড সন্সের মালিক পলক বলেন, মেলায় অষ্টম দিন চলছে অথচ আজও স্টল প্রস্তুতের হাতুড়িপেটার ঠকঠক শব্দ হচ্ছে। স্টল আর প্যাভিলিয়ন কম থাকায় পুরোপুরি হতাশ হলাম। 

মেলা সূত্র জানায়, এখনো প্রায় ৩০ ভাগ স্টল প্রস্তুত বাকি রয়েছে। ফলে চাহিদামতো পণ্য পাচ্ছে না সবাই। 

মেলায় আতর বিক্রেতা হামিদুর রহমান বলেন-গত শুক্র ও শনিবার যা-ই বিক্রি হয়েছে বাকি ছয়দিনে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়নি। এ সময় তিনি স্টল প্রস্তুত না হওয়ায় আয়োজকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রবেশদ্বার ঠিকাদার ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এবার রাজধানী থেকে আসা ক্রেতা দর্শনার্থীরা খুব সহজেই মেলায় আসতে পারছেন। শেখ হাসিনা সরণি দিয়ে অবাধ যাতায়াত করছেন। পাশাপাশি ঢাকা বাইপাস সড়কেও এবার যানজটমুক্ত রাখতে পুলিশ দায়িত্বে রয়েছে। তারপরও ছুটির দিন ছাড়া লোকজন কম। এতে ইজারার অর্থ ওঠাতে হিমশিম খেতে হতে পারে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লোকসান গুনবে। 

মেলায় হাতিল ফার্নিচারের বিক্রয় কর্মী মাহফুজ আহমেদ বলেন, আমাদের মেলার স্টল নেওয়া শুধু বিক্রির জন্য নয়। এখান থেকে অর্ডার পাওয়া যায়। যা কোম্পানির নিজস্ব কারখানা থেকে তৈরি করে গ্রাহককে দেওয়া হয়। এখানে প্রদর্শনই মূল উদ্দেশ্য।  

মেলা ঘুরে দেখা যায়-পোশাক, জুতা, আসবাব, সাজসজ্জা ও প্রসাধনী জাতীয় পণ্যের সমাহার রয়েছে। এসবের দাম কিছুটা বেশি বলে প্রথমদিকে বিক্রি কম।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে আসা দর্শনার্থী কামরুন নাহার বলেন, মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়নে যেসব পণ্য বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে তাতে নতুনত্ব নেই। সব সাধারণ হাটবাজারে পাওয়া যায়। অথচ এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা! 

তবে তীব্র শীত কমতে শুরু করায় দর্শনার্থীরা দলবেঁধে আসবে এমন প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম