পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও ক্লান্তি লাগে, ভয়ঙ্কর রোগের লক্ষণ?
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ পিএম
আপনি পর্যাপ্ত ঘুমান, এরপরও আপনার শরীরর ক্লান্ত লাগছে। এটি কোনো ভয়ঙ্কর রোগের লক্ষণ কিনা তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন। জীবন-জীবিকা পরিচালনার জন্য সবাইকে কাজ করে খেতে হয়। কেউ অন্যের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, আবার কেউ নিজের প্রতিষ্ঠানে করেন। এই কর্মজীবনে কাজের কমতি নেই। ব্যক্তি কিংবা পারিবারিক জীবন ও কর্মজীবনের পাশাপাশি পরিচালনা করতে গিয়ে প্রায় সবাই হাঁপিয়ে উঠেন।
এই হাঁপিয়ে ওঠার কারণ যাই হোক না কেন, আমরা সেসব গুরুত্ব দিই না। খুব স্বাভাবিকভাবে কিছুটা বিরতি দিয়ে ফের নতুন করে আবার কাজ শুরু করি। এভাবে কাজ করতে গিয়ে কখনো কখনো ক্লান্তিবোধও হয়। তখন একটিই ভাবনা আসে— হয়তো অতিরিক্ত কাজ করছি বলে ক্লান্ত লাগছে। আদতে কি ঠিক?
আবার এর ব্যতিক্রমও হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, কাজের চাপ না থাকার পর এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর পরও ক্লান্তিবোধ হয়। এ সমস্যাও স্বাভাবিকভাবে নেওয়া হয়।
কিন্তু এ ধরনের সমস্যার পেছনে অনেক সময়ই ভয়ঙ্কর কোনো রোগের সম্ভাবনা থাকে। মূলত আয়রনের ঘাটতি থেকে এসব সমস্যা হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদানকারী ওয়েবসাইট হেলথ লাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— নারী-পুরুষ সবার আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ থেকে রক্ত স্বল্পতাও হতে পারে।
এ সমস্যা থেকে ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট ও ত্বক ফ্যাকাসে ভাব হওয়ার মতো সমস্যা হয়ে থাকে। মূলত শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে আয়রনের প্রয়োজন হয়। লোহিত রক্তকণিকার একটি প্রোটিন রক্তনালি দ্বারা অক্সিজেন বহনে কার্যকর করে। আর শরীরে যদি হিমোগ্লোবিন পর্যাপ্ত না থাকে, তাহলে টিস্যু ও পেশিগুলো কার্যকর হতে অক্সিজেন পাবে না। এ কারণে শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক— সবার ক্ষেত্রেই সমস্যা হওয়ার আশঙ্ক থাকে।
শরীরে আয়রনের ব্যাপক ঘাটতি থাকলে ক্লান্তিবোধ হয়। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া, বিশ্রাম নেওয়া আর পর্যাপ্ত ঘুমের পর যদি ক্লান্ত লাগে, তা হলে সতর্ক হওয়া উচিত। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলেই এসব সমস্যা হয়। এসব সমস্যা থেকে শরীরের কোষে কোষে পরিমাণমাফিক অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। ফলে প্রায়ই ক্লান্ত লাগে।
আয়রনের ঘাটতি থাকলে অনেক সময় মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেও অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে পারে। মস্তিস্কে অক্সিজেনের অভাব হলে মাথাব্যথা কিংবা মাথা ঘোরা ও শারীরিকভাবে অস্বস্তি অনুভব হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের সময় এসব সমস্যা হলে কখনো কখনো তা মাইগ্রেন আকারে প্রকাশ পায়।
শরীরের প্রতিটি কোষে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন পৌঁছানো প্রয়োজন। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে ত্বক ফ্যাকাসে ও বিবর্ণ হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে ত্বক তার উজ্জ্বলতা হারাতে থাকে। এ সমস্যাকে রক্তস্বল্পতার লক্ষণও মনে করা হয়।
এ ছাড়া বেঁচে থাকার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অক্সিজেন শরীরে সরবরাহে যদি ঘাটতি থাকে, তা হলে বুকেও ব্যথা হয়ে থাকে, যা থেকে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। উচ্চ রক্তচাপ বা হৃৎযন্ত্রের সমস্যা না থাকলেও অনেক সময় বুকে ব্যথা হয়। এ ধরনের সমস্যায়ও আয়রনের ঘাটতি বলে বিশ্বাস করা হয়।