Logo
Logo
×

ডাক্তার আছেন

পুরুষাঙ্গে মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিক, যে ক্ষতি হতে পারে 

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ১০:৫২ পিএম

পুরুষাঙ্গে মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিক, যে ক্ষতি হতে পারে 

ছবি : সংগৃহীত

মানব পুরুষাঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। একই সঙ্গে এ ক্ষুদ্র কণার বিস্তার ও সম্ভাব্য স্বাস্থ্যগত প্রভাব নিয়েও উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব নিউ মেক্সিকোর বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

সেখানে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, মানুষ ও কুকুরের শুক্রাশয়ের মধ্যে মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। যে কারণে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। 
ডাউন অব আর্থের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা ২৩ জন মানুষের শুক্রাশয় এবং ৪৭টি পোষ্য কুকুরের শুক্রাশয়ের নমুনা পরীক্ষা করেছেন- তাতে উদ্বেগে থাকার মতো মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ১২ ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক মিলেছে।


অপর এক গবেষণায় পাঁচজন পুরুষের যৌনাঙ্গের টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে চারটিতে সাত ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। বুধবার এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে ‘আইজেআইআর: ইয়োর সেক্সুয়াল মেডিসিন জার্নাল’-এ।

মাইক্রোপ্লাস্টিক মূলত পলিমারের টুকরা, যার আয়তন এক মাইক্রোমিটার থেকে শুরু করে পাঁচ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

এর চেয়ে ছোট যে কোনো পলিমারই ‘ন্যানোপ্লাস্টিক’ হিসেবে বিবেচিত, যা পরিমাপ করা হয় এক মিটারের একশ কোটি ভাগের এক ভাগ হিসাবে। এর উৎপত্তি ঘটে আকারে বড় প্লাস্টিক ভেঙে ফেলার মাধ্যমে, যেগুলো রাসায়নিক উপায়ে বা কায়িক শ্রমের মাধ্যমে ছোট ছোট টুকরায় রূপান্তর করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মধ্যে কিছু ক্ষুদ্র কণা মানবদেহের প্রধান অঙ্গগুলোর বিভিন্ন কোষ ও টিস্যুতেও আক্রমণ করতে সক্ষম। এমনকি মানবদেহে এদের উপস্থিতি ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার প্রমাণও মিলেছে।

এ গবেষণার প্রধান লেখক ও প্রজনন বিদ্যা বিশেষজ্ঞ রানজিথ রামাসামি সিএনএন’কে বলেছেন, এজন্য তিনি সহায়তা নিয়েছেন আগের এক গবেষণা থেকে, যেখানে মানুষের হৃদযন্ত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকার প্রমাণ মিলেছিল। আর ‘ইউনিভার্সিটি অব মায়ামি’তে কাজ করার সময় এ গবেষণা শুরু করেন তিনি।

তিনি আরও যোগ করেন, পুরুষাঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে তিনি মোটেও বিস্মিত নন। কারণ এটি হৃদযন্ত্রের মতোই ‘রক্তনালীওয়ালা’ একটি অঙ্গ।

এসব নমুনা সেইসব অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, যারা ‘ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা ইডি নামের রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আর তারা ২০২৩ সালের অগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এর চিকিৎসা অর্থাৎ ‘পেনাইল ইমপ্লান্ট সার্জারি’র জন্য ইউনিভার্সিটি অব মায়ামি’র হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

পরবর্তীতে ‘কেমিক্যাল ইমেজিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এইসব নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়। এতে উঠে আসে, নমুনা দেওয়া পাঁচ জন ব্যক্তির মধ্যে চারজনের যৌনাঙ্গের টিস্যুতেই মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে।

গবেষণা অনুসারে, এতে সাতটি ভিন্ন ধরনের মাইক্রোপ্লাস্টিক শনাক্ত করা গেছে, যেখানে সবচেয়ে প্রচলিত মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল ‘পলিথিলিন টেরেফথালেট (পেট)’ ও ‘পলিপ্রপাইলিন (পিপি)’।

প্লাস্টিক সাধারণত মানবদেহের বিভিন্ন কোষ ও রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটায় না। তবে এগুলো দেহের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপের অনেক প্রক্রিয়াতেই শারীরিকভাবে ব্যঘাত ঘটাতে পারে, যার মধ্যে আছে ইরেকশন ও শুক্রাণু তৈরির মতো বিষয়ও।

এই বিভিন্ন ধরনের পলিমার দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজনীয় জিনিস উৎপাদন করতে কাজে লাগে। প্লাস্টিক ব্যাগ থেকে শুরু করে প্লাস্টিক বোতল তৈরিতে। পানি সরবরাহের জন্য পাইপ তৈরিতে, পানি খাওয়ার পাত্র থেকে শুরু করে আরও নানা কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের দূষণের কারণে প্রভাব পড়ে জমির ফসলেও। এই ধরনের প্লাস্টিক-দূষক নানা ধরনের রাসায়নিক ছাড়তে পারে যা ভয়ংকর ক্ষতিকর বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।   

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এবং ত্বকের সংস্পর্শে মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক ঢুকতে পারে। মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাবে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, ডিএনএ-এর ক্ষতি থেকে শুরু করে দেহের নানা অঙ্গের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম