Logo
Logo
×

ডাক্তার আছেন

গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপে যা করণীয়

Icon

ডা. হাসনা হোসেন আঁখি

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৩ পিএম

গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপে যা করণীয়

গর্ভকালীন সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৪০ মিলিমিটার পারদের সমান বা বেশি অথবা ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৯০-এর সমান বা বেশি হলে তাকে গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ বলে। রক্তচাপ ১৬০/১১০-এর সমান বা তার বেশি হলে তাকে মারাত্মক উচ্চ রক্তচাপ বলে। যদি গর্ভাবস্থায় ২০ সপ্তাহের আগে আপনার উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে তা সাধারণত ক্রনিক উচ্চ রক্তচাপ বলে ধরা হয়। এ ধরনের রক্তচাপ সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী এবং পাঁচ ভাগের মতো মায়েরা এতে আক্রান্ত হন। গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত গর্ভাবস্থায় দেখা দেয়; এ ধরনের রক্তচাপ বেশিরভাগ সময় বাচ্চার জন্মের পরে ঠিক হয়ে যায়।

* ঝুঁকির কারণ

ওজন বেশি থাকা, অলস জীবন-যাপন, ধূমপান, মদ্যপান, প্রথমবারের মতো গর্ভাবস্থা, পারিবারিক ইতিহাস একাধিক শিশু গর্ভে ধারণ করা, ৪০ বছর বয়স বা তার বেশি এবং টেস্টটিউব বেবি ধারণ করা ইত্যাদি।

* লক্ষণ

উচ্চ রক্তচাপের সাধারণত লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এ কারণে নিয়মিত রক্তচাপ না মাপলে হয়তো বুঝতেই পারবেন না যে, আপনার উচ্চ রক্তচাপ আছে। তবে কিছু কিছু লক্ষণ মাঝে মাঝে দেখা দিতে পারে, যেমন-প্রচণ্ড মাথাব্যথা, উদ্বিগ্ন থাকা, বমি আসা, চোখে ঝাপসা দেখা, পায়ে পানি আসা এবং ওপরের পেটে ব্যথা করা ইত্যাদি।

* গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের প্রভাব

হাই ব্লাডপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ আমাদের চোখ, হৃৎপিণ্ড এবং শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের জন্য ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় মায়ের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকির মধ্যে আছে তার গর্ভস্থ সন্তানও। টাইপ প্রেগনেন্সিতে উচ্চ রক্তচাপকে একটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যে সমস্যাগুলো দেখা যায় তার মধ্যে হচ্ছে, ওজন বৃদ্ধি না হওয়া, প্লাসেন্টা আব্রাপশন, প্রিম্যাচিউরড বার্থ অর্থাৎ সময়ের আগেই প্রসব হয়ে যাওয়া, সিজারিয়ান সেকশনের ঝুঁকি, গর্ভস্থ শিশু পেটের মধ্যেই মারা যাওয়া, প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ, কিডনি ফেইলিউর ইত্যাদি।

* প্রতিরোধ

এসব রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। অনেক মহিলাকে উচ্চ রক্তচাপের কারণে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। এ ওষুধ রক্তচাপকে কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের কিছু কিছু ওষুধ খাওয়া বারণ। যেমন-লোসারটেন, ভালসারটান ইত্যাদি। এক্ষেত্রে অবশ্যই আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে। গর্ভাবস্থা উচ্চ রক্তচাপের জন্য অনেক সময় মায়ের সঙ্গে বাচ্চার রক্তপ্রবাহ কমে যায় এবং যার ফলে বাচ্চার নিয়মিত বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। এ কারণে নিয়মিত চেকআপ খুবই জরুরি। এ সময় শুয়ে বসে কাটানো যাবে না, হালকা শারীরিক কাজকর্ম করতে হবে এবং দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, লবণ কম খেতে হবে কারণ লবণ রক্তচাপকে বাড়িয়ে দেয়।

নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই, গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের ক্ষতিকর দিক থেকে আপনাকে এবং আপনার শিশুকে দূরে রাখবে।

লেখক : ফার্টিলিটি কনসালটেন্ট ও গাইনোকোলজিস্ট, বি আই এইচ এস জেনারেল হসপিটাল, মিরপুর ১, ঢাকা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম