ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ০৫:২২ এএম
![ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/06/11/image-684744-1686439323.jpg)
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি গত বছর গাজীপুর জেলার সাতটি পোষাক কারখানার সর্বনিম্ন বেতনভুক্ত ৯ হাজার ৭১৭ জন গার্মেন্টস শ্রমিককে ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা’ (ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার) দিয়েছে।
হেলথ মাইক্রো-ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে বছরে মাথাপিছু মাত্র ৪৮৭ টাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের সিজারিয়ানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়েছে।
শনিবার বারডেম অডিটোরিয়ামে এক গবেষণা সংক্রান্ত ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ‘নিয়োগকর্তা-স্পন্সরড হেলথ ইন্সুরেন্স (ইএসএইচআই) স্কিমের আওতায় ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত গাজীপুর জেলার সাতটি তৈরি পোশাক (আরএমজি) কারখানায় গার্মেন্টস কর্মীদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে একটি গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়েছিল।
১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী মোট ৯ হাজার ৭১৭ জন শ্রমিককে এই স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। হেলথ মাইক্রো ইন্স্যুরেন্সের এই নতুন মডেলে চিকিৎসা, ল্যাবরেটরি সুবিধা, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং ওষুধ সরবরাহ ছিল।
আরও জানানো হয়, গার্মেন্টস কর্মীদের চিকিৎসার জন্য বার্ষিক কভারেজ ছিল ১৫ হাজার টাকা, আর এই স্কিমে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রিমিয়াম ছিল ৪৮৭ টাকা। বাকি খরচ বীমা কোম্পানি এবং কারখানার মালিকের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করা হয়েছিল। সমস্ত চিকিৎসা তথ্য দেখতে এবং তৈরি করতে একটি সাধারণ সফ্টওয়্যার ব্যবহৃত হতো।
গবেষণা জরিপে বলা হয়েছে, হেলথ মাইক্রো-ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে সর্বমোট ৪ হাজার ৫২৪ জন (৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ) চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ ছিলো নারী। অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ২৮ দশমিক ৩ বছর। গড় চিকিৎসা পরামর্শের হার ছিল ৪ দশমিক ৭ বার।
অংশগ্রহণকারীরা বেশিরভাগ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ভুগছিলেন (২৪ দশমিক ৪ শতাংশ), এবং সর্বাধিক নির্ধারিত ওষুধগুলোর মধ্যে ছিল অ্যান্টি-আলসার ওষুধ। এক্ষেত্রে ওষুধের খরচ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা খরচ, পরামর্শ ফি এবং মোট চিকিৎসা খরচের গড় মান ছিল যথাক্রমে ১২৬ টাকা, ৩১৫ টাকা, ২০০ টাকা এবং ৭৩৪ টাকা।
স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে কারখানার মালিকদের প্রদত্ত বার্ষিক নেট প্রিমিয়াম ছিল ৪০ লাখ ৯৪ হাজার ৫০৪ টাকা এবং মোট স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় সংগৃহীত হয়েছিল ৫২ লাখ ৩০ হাজার ১৫৬ টাকা।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের বৃহত্তম আরএমজি সেক্টরে স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেসযোগ্য করার জন্য এই নিয়োগকর্তা-স্পন্সরড হেলথ ইন্সুরেন্স স্কিমটি হেলথ মাইক্রো-ইন্সুরেন্সের জন্য একটি ভাল বিকল্প।
এসব বীমাকৃত শ্রমিকদের ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ বা ৪ হাজার ৫২৪ জন পোশাক কারখানার কর্মচারী মোট ১৫ হাজার ৩৫৪টি চিকিৎসা পরামর্শে চিকিৎসা পরামর্শ চেয়েছিলেন। তারা গড়ে ৪ দশমিক ৭ বার পরামর্শ করেছে। এবং প্রায় ৭২ দশমিক ২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এক থেকে পাঁচ বার সাহায্য চেয়েছিলেন, ২০ দশমিক ৬ শতাংশ ৬ থেকে ১০ বার এবং বাকি ৭ দশমিক ২ শতাংশ ১০ বারের বেশি পরিদর্শন করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, সমিতির মহাসচিব জনাব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, এনএইচএন-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম এ সামাদ. এনএইচএন-এর কেন্দ্র পরিচালক ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট খন্দকার রাশেদুল হাসান, নিউ এশিয়া গ্রুপ-এর পরিচালক গাউস মোহাম্মদ এবং গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত চিকিৎসক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
উল্লেখ্য, এটি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ‘নিয়োগকর্তা-স্পন্সরড হেলথ ইন্সুরেন্স (ইএসএইচআই) স্কিম’- যা বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মাইক্রো ইন্সুরেন্সের একটি নতুন মডেল।