হাঁপানি হলো শ্বাসপথে বায়ু চলাচলে বাধা তৈরি করা। এটি এমন একটি রোগ যা ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। শিশুদের সাধারণ দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলোর মধ্যে একটি, তবে প্রাপ্তবয়স্কদেরও হাঁপানি হতে পারে। হাঁপানির কারণে শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় করা এবং রাতে বা ভোরে কাশি হয়।
* প্রকারভেদ
▶ তীব্র হাঁপানি : এতে ফুসফুসের বায়ুবাহী নালিগুলো আকস্মিকভাবে সংকুচিত হয় ও শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্টের সৃষ্টি করে।
▶ দীর্ঘমেয়াদি হাঁপানি : এতে ঘন ঘন ফুসফুস আক্রান্ত হয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
▶ এলার্জিক অ্যাজমা : সাধারণত কোন এলার্জেন বা এন্টিজেন নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকলে আমাদের ইমিউন সিস্টেমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। যেমন-ফুলের রেণু, মাইট, ধুলাবালি ইত্যাদি। এর প্রভাবে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয় ও হাঁপানি দেখা দেয়। একে এটোপিক অ্যাজমা বা এলার্জিক অ্যাজমাও বলা হয়।
▶ নন এলার্জিক অ্যাজমা : এ ধরনের অ্যাজমা এলার্জি ঘটিত নয়, বরং ধূমপান, রাসায়নিক দ্রব্য, জীবাণুর সংক্রমণ, মানসিক চাপ, খাদ্য সংরক্ষণকারী উপাদান, পারফিউম, অত্যাধিক ঠান্ডা, গরম, আর্দ্র ও শুষ্ক বাতাসের কারণে দেখা দেয়।
* জেনেটিক কারণে যাদের অ্যালার্জি হয়
▶ বংশে মা-বাবা, দাদা-দাদি বা অন্য কারো হাঁপানি থাকলে হতে পারে।
▶ আবার কারও কারও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণেও হতে পারে।
* প্রতিকার
অ্যাজমার ওষুধ দুই ধরনের। উপশমকারী ও প্রতিরোধককারী। শ্বাসনালির সংকোচন বন্ধ করতে উপশমকারী ওষুধ ব্রংকোডাইলেটর যেমন-সালবিউটামল, টারবিউটালিন, থিউফাইলিন, ব্যামবুটারল ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহৃত হয়। যদি সঠিক নিয়ম পালন করে ওষুধ খাওয়া হয় তাহলে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে নেবুলাইজার লাগতে পারে। হাঁপানি উপশমের প্রথম ওষুধ হলো ইনহেলার। এটি দুরকমের হয়, স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। শ্বাসকষ্টের তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য কয়েক রকম ওষুধ ইনহেলারের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়, যেমন, সালবুটামল, সালমেটেরোল এবং ফোরমোটেরোল। ইনহেলার ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে ব্যবহার করলে নিয়ন্ত্রণে থাকে।
লেখক: সহকারী পরিচালক, শ্যামলী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল।