Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

শীতে ত্বকের যত্নে যা মেনে চলবেন

Icon

ডা. নুসরাত জাহান দৃষ্টি

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শীতে ত্বকের যত্নে যা মেনে চলবেন

ত্বক আমাদের শরীরের আবরণ যা দেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অংশকে সুরক্ষিত রাখে। তাই ত্বকের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। শরীরভেদে যেমন ত্বকের ভিন্নতা দেখা যায়, তেমন ঋতুভেদেও ত্বকের ওপর ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব হয়ে থাকে। শীতকালের ঠান্ডা আবহাওয়া, আর্দ্রতার অভাব, দেহের অভ্যন্তরীণ অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে ওঠে। ফলে ত্বকের লাবণ্যতা হারিয়ে যায়। শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকে স্বাভাবিক তেলের আবরণ শুষে নেয়। ফলে ত্বক নিস্তেজ হয়ে যায়। শীতে ত্বকের যত্নের জন্য বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত।

* ক্লিনজার

ত্বক পরিষ্কার করার জন্য স্বাভাবিক ক্লিনজার ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত শুষ্ক ধরনের ক্লিনজার বা ক্ষারজাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। যা ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয়। এমন ধরনের ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত যা ত্বককে হাইড্রেটিং রাখবে, সুগন্ধিমুক্ত থাকবে, ত্বককে নরম এবং ময়েশ্চার করবে।

* ময়েশ্চারাইজার

ত্বক স্বাভাবিক রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ময়েশ্চারাইজার ত্বকে নিঃসৃত তেল সংরক্ষণে সহায়তা এবং লাবণ্যতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের ময়েশ্চার নষ্ট হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন-বিভিন্ন জায়গায় চামড়া ওঠা, পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া, ঠোঁট ফেটে যাওয়া, শরীরে বিভিন্ন অংশের চামড়ায় টান ধরা ইত্যাদি। তাই, নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। ত্বকে কিছুটা ভারী ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখবে। বিশেষ করে, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, সীয়া বাটার সমৃদ্ধ প্রসাধনী ত্বকের ময়েশ্চার ধরে করে।

* পানি

পানির অপর নাম জীবন। পানির চাহিদা সব সময় থাকে। গরমকালে কিছুটা বেশি এবং শীতকালে কিছুটা কম। তবে গরম এবং শীত সব ঋতুতে পানির ভূমিকা অপরিসীম। শুধু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে না। ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। নিয়মিত অন্তত সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। যা ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্রতা বজায় রাখবে। পাশাপাশি পানিসমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি ও তাজা ফলমূল গ্রহণ করা উচিত। শুধু ত্বকের জন্য নয় বরং শরীরের জন্য পানির ভূমিকা অপরিসীম।

* গোসল

শীতকালেও নিয়মিত গোসল করা জরুরি। নিয়মিত গোসল না করলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের রোগ হতে পারে। যেমন-সর্দি-কাশি, অ্যালার্জি, ছত্রাকজাতীয় জীবাণুর সংক্রমণসহ ইত্যাদি। শীতে নিয়মিত ঠান্ডা বা হালকা কুসুম গরম পানি, যা ত্বকের তাপমাত্রার সঙ্গে সহনীয় তা দিয়ে গোসল করতে হবে। অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত। অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর্দ্রতা বজায় রাখতে গোসলের আগে বা গোসলের পরে শরীরে তেল দেওয়া যেতে পারে বা গোসলের জন্য ব্যবহৃত পানিতে তেল মিশিয়ে গোসল করা যেতে পারে।

* সানস্কিন

শীতকালে কমবেশি আমরা সবাই রোদে যাই। শীতে রোদ পোহাতে অনেকেরই ভালো লাগে। অনেকের ধারণা থাকে যে, শীতকালে যেহেতু রোদের তীব্রতা কম, তাই সানস্কিন ব্যবহার তেমন প্রয়োজন নয়। কিন্তু গরম ও শীত, উভয়কালেই সানস্কিন ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে সূর্যরশ্মির তেজ কম অনুভূত হলেও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। সানস্কিনে (এসপিএফ) সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর অন্তত ১৫ থেকে ৩০ বা তার বেশি থাকা উচিত। ত্বকের ধরন অনুযায়ী মানানসই সানস্কিন শীতকালেও ব্যবহার করা উচিত।

* এক্সফোলিয়েট

ত্বককে এক্সফোলিয়েট করুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য এক্সফোলিয়েশন জরুরি। এক্সফোলিয়েট করলে ত্বকের মৃত কোষ মরে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত করলে সেক্ষেত্রে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই মৃদু এক্সফোলিয়েটার ব্যবহার করা উচিত। যাতে ত্বকের কোনো সমস্যা না হয়।

* কাপড়

শীতে গরম কাপড় পরিধান করতে হয়। ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণে গরম কাপড় পরিধান করা উচিত। যেন ত্বকে কোনো ধরনের অস্বস্তি অনুভূত না হয়।

* হিউমিডিফায়ার

ঘরের ভেতরে তাপমাত্রা বেশি থাকলে, সেক্ষেত্রে শরীরের ত্বক শুষ্ক হতে পারে। হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, ঘরের তাপমাত্রা সহনীয় থাকে। ফলে, শীতেও ত্বকের ময়েশ্চার বজায় থাকে। শীতকালেও ত্বকের ধরন অনুযায়ী ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া উচিত। নিয়ম মেনে চললে এ সময় ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর ও প্রাণবন্ত।

লেখক : সেক্সুয়াল হেলথ এডুকেটর, সেক্সএডু উইথ ডা. দৃষ্টি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম