পিরিয়ডের সময় তলপেটে অসহ্য ব্যথা হচ্ছে? যন্ত্রণায় ছটফট করছেন? বিছানা থেকে উঠে বসতে পারছেন না? চিন্তা নেই, কয়েকটি খুব সাধারণ ঘরোয়া টোটকায় পিরিয়ডের ব্যথা ম্যাজিকের মত কমে যাবে।
পিরিয়ড নারীদের শরীর-স্বাস্থ্য কেমন চলছে তা বলে দেয়। সাধারণত ২৮ থেকে ৩৮ দিনের মধ্যেই পিরিয়ডের সার্কেল ঘোরাফেরা করে। প্রতিটি সার্কেল ৩-৫ দিন থাকে। খুব বেশি হলে ৭ দিনও স্থায়ী হয়। পিরিয়ডের সময় তলপেটে ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ ওই সময় জরায়ু সংকুচিত হতে থাকে। কিন্তু অনেক সময়ই ব্যথা অসহ্য হয়ে ওঠে। ব্যথায় অনেক নারী বমি বমি ভাব অনুভব করেন। এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী করা উচিত, একনজরে দেখে নিন ঘরোয়া টোটকাগুলি।
১) পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে গরম সেঁক দুর্দান্ত কাজ করে। সেঁক দিলে তলপেটে রক্ত চলাচল ভাল হয়, মাংস পেশি নরম হয়, ফলে ব্যাথা অনেকটাই কম হয়। বাড়িতে হট ব্যাগে গরম জল ভরে সেঁক দিন। যদি হট ব্যাগ না থাকে তাহলে শক্তপোক্ত কাঁচের বোতলে গরম জল দিয়ে সেঁক দিন।
২) বেশি করে Omega-3,ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার খান। সোজা কথায় যে কোনও মাছ, ডিম, সব রকমের শাকসব্জি, মটরশুটি, সয়াবিন, ছানা, বাদাম, দই, ফলের মধ্যে পেঁপে, কমলালেবু, কলা নিয়ম করে খান। তার কারণ অতিরিক্ত পিরিয়ডের ব্যথার ফলে তলপেটের জায়গাটি ফুলে ওঠে। Omega-3 ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
৩) পিরিয়ডের কয়েকটা দিন অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। বেশি কফি খাবেন না। পিরিয়ডের সময় বেশি অ্যালকোহল-ক্যাফিন খেলে পেট গরম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে,ফলে শারীরিক অস্বস্তি অনুভব করবেন।
৪) আদা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে খুব ভালো সাহায্য করে। অতিরিক্ত ব্যথা হওয়ার প্রবণতা থাকলে গরম চা বা উষ্ণ গরম জলে অল্প আদা কুচি করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে অনেকটা আরাম পাবেন।
৫) গোলমরিচ, মেথি আর একটু কাঁচা হলুদের একটি বিশেষ মিশ্রণ ব্যথা কমাতে খুব সাহায্য করে। পদ্ধতি হল, ২ কাপ জলে এই তিনটি উপকরণ ১ টেবিল চামচ করে মেশান। এরপর সেটি ১০ মিনিট ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এবার একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন। তলপেটে ব্যথা হলে অল্প গরম থাকা অবস্থায় বিশেষ মিশ্রণটি পান করুন, দ্রুত আরাম পাবেন। ব্যথা প্রচণ্ড হলে মিশ্রণটি দিনে ২-৩ বার পান করুন।
৬) ব্যথা কমাতে আরও একটি খাবার দারুণ কাজ করে, তা হল ডার্ক চকোলেট। ভাবছেন চকোলেট তো শরীরে ফ্যাট জমায়! আসল ব্যাপার হচ্ছে, ডার্ক চকোলেটে চিনি থাকে না এবং এটি ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর। এই ম্যাগনেসিয়াম তলপেটের যন্ত্রণাদায়ক খিঁচুনি কমায়, পেশিগুলিকে আরাম দেয়।
৭) হালকা ব্যায়াম করুন। পেটে ব্যথা হচ্ছে বলে সারাদিন শুয়ে-বসে থাকবেন না। বাড়ির ছাদে বা খোলা উঠোনে হাঁটাচলা করুন, সাইক্লিং করুন। এতে শরীরের আড়ষ্টতা কমবে।
৮) পিরিয়ডের সময় খুব বেশি টাইট প্যান্ট পড়বেন না, কারণ এতে তলপেটে চাপ পড়ে। পারলে হাই ওয়েস্ট প্যান্ট বা সুতির পাজামা পড়ুন। নিশ্চিন্তে হাঁটাচলা করতে পারবেন।