জাম খেলে মুক্তি পাবেন যেসব রোগ থেকে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০৪:১৭ পিএম
বাজারে ছেয়ে গেছে জাম। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর গ্রীষ্মের এই ফল জাম। ভিটামিন সি, আয়রন আর অ্যান্থোসায়ানিনের মতো চমৎকার উৎস জাম, যা ফলটিকে গাঢ় বেগুনি রঙ দেয়। এ মৌসুমি ফল নিয়মিত খেলে পাওয়া যায় অনেক পুষ্টিগুণ। এতে আছে ১০০ গ্রাম জামে ৬২ ক্যালোরি, ১৫.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.৫ গ্রাম ফাইবার, ১৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১.৪২ মিলিগ্রাম আয়রন, ৫৫ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম। জার্নাল অব ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
জেনে নিন কী কী উপকারে আসে জাম—
জার্নাল অব এথনোফার্মাকোলজির গবেষণায় দেখা গেছে, ফলটিতে জ্যাম্বোলিন ও জাম্বোসিনের মতো যৌগ রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে। জামে ট্যানিন ও ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে, যা প্রদাহ কমায় এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। জামে রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, যা হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়তা করে। আর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে জাম।
তীব্র রোদে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। জামে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি আমাদের ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে এবং এ সমস্যাগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন জার্নালের একটি গবেষণা বলছে— জাম ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং দাগ কমায়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের গবেষণায় দেখা যায়, জামে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শ্বেত রক্ত কোষের উৎপাদন বাড়ায়, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাড়তি ওজন কমাতে দুর্দান্ত ফল জাম। ক্যালোরি কম ও ফাইবার বেশি, যা আমাদের দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এবং সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণ কমায়। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড সায়েন্সেস অ্যান্ড নিউট্রিশনের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে— জামে থাকা ফাইবার শুধু হজমেই সাহায্য করে না, ওজনও নিয়ন্ত্রণ করে।
জাম হার্টের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে পটাসিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। জার্নাল অব কার্ডিওভাসকুলার ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিকসে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, জামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যার ফলে সার্বিক কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
গ্রীষ্মের গরমের কারণে ডিহাইড্রেশন হয় এবং শরীরে টক্সিন জমা হয়। জাম প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে। এটিতে উচ্চমাত্রায় পানি রয়েছে এবং মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং আমাদের হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে।
জার্নাল অব ট্র্যাডিশনাল অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিনের একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, জাম লিভার ও কিডনি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
জাম আমাদের দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। জামের অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট বৈশিষ্ট্য মুখের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য উপকারী। দ্য জার্নাল অব ন্যাচারাল সায়েন্স, বায়োলজি এবং মেডিসিন বলছে, জামের ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্য মাড়ির রোগ ও নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।