শীতে কানের সমস্যা
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শীতে নানা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সক্রিয় হয়ে ওঠে। শুধু শীতকালে ঠান্ডা লেগেই কিন্তু কানে ইনফেকশন হয় না। সারা বছরই কানে ইনফেকশন হতে পারে। তবে শীতে কেন এ ইনফেকশন বেশি হয় এবং কীভাবে তা রোধ করা সম্ভব, তা আগে থেকে জেনে রাখা ভালো।
শীতে কানের সমস্যা কেন হয়? সাধারণত কানের বাইরের দিকে বা মিড্ল ইয়ারেই ইনফেকশন হয়ে থাকে। ঠান্ডা লাগলে নাকের সর্দি কানের দিকে চলে গিয়ে ইনফেকশন বাড়ায়। শিশু থেকে বড় সবারই কানের ইনফেকশন হতে পারে। এখন শরীর সুস্থ রাখতে অধিকাংশ লোকই সাঁতার কাটেন। তারপর কান পরিষ্কার করতে ইয়ার বাড ব্যবহার করেন। ফলে খুব সহজেই কানে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে ও ইনফেকশন হতে পারে। এক্সটার্নাল ইয়ারে তখন ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক।
এছাড়া খুব ঠান্ডা লেগে আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্টে ইনফেকশন হলে তা কানে পৌঁছে যেতে পারে। এক্ষেত্রে স্ট্রেপটোক্কাস নিউমোনিয়া বা হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ব্যাকটেরিয়া, কানে প্রদাহ তৈরি করে। আর সেখান থেকেই কানের মাঝখানের অংশে তরল পদার্থ জমা হয়। এছাড়া শীতে ঠান্ডা, ধূমপান, সাইনাস সংক্রমণ বা আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেও কানের ইনফেকশন হতে পারে। শীতকালে দেখা যায়, ঠান্ডা-সর্দি লাগার পর বাচ্চা বলছে অনেক কান ব্যথা করছে, এ ক্ষেত্রে দ্রুত একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ পরামর্শ না নিলে ঠান্ডা-সর্দি মধ্যকর্ণে প্রদাহ তৈরি করে ফেলে এবং অল্প সময়ের মধ্যে এমনকি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কানের পর্দা ফুটো হয়ে যেতে পারে। কান পরিষ্কার রাখার জন্য বাইরে থেকে কিছু করার প্রয়োজন নেই। কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে সক্ষম। কান পরিষ্কার করতে বারবার কটন বাড ব্যবহার করলে কানে ইনফেকশন হতে পারে। তারচেয়ে বরং রোজ গোসলের পরে তোয়ালে দিয়ে কানের যতটা অংশ পারেন মুছে নিন। শীতকাল এলেই যাদের কানের ইনফেকশনে ভুগতে হয় তাদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, নিয়মিত নাক পরিষ্কার করা, এতে ইনফেকশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পথ বা নালি স্বাভাবিক থাকে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে বাজারে প্রচলিত নরমাল স্যালাইন নাকের ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন। শীতে রাতে বাইরে বেরোলেই পরতে হবে কানঢাকা পোশাক। মাফলার, মাঙ্কি টুপি থেকে এখনকার বাহারি কানঢাকা, সুবিধা মতো কিছু একটা পরে নিলেই হলো।
লেখক : আবাসিক সার্জন (ই.এন.টি), নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।