রাশিয়ায় মানবপাচারের হোতা তামান্না গ্রেফতার, জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
![রাশিয়ায় মানবপাচারের হোতা তামান্না গ্রেফতার, জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/06/Untitled-12-67a4c95543b39.jpg)
প্রতীকী ছবি
রাশিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তার নাম ফাবিহা জেরিন তামান্না।পরে সিআইডির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বৃহস্পতিবার সকালে নেপালে পালানোর সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিআইডির টিএইচবি শাখার একটি দল। পরে সিআইডির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিআইডি জানায়, গ্রেফতার তামান্না ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের অংশীদার। এই চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চকলেট ফ্যাক্টরি, ক্লিনার অথবা বাবুর্চির কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে সৌদি আরব ওমরাহ ভিসায় পাঠায়। সেখানে তাদেরকে ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুলতান তাদেরকে দাস হিসেবে রাশিয়ান সোলজারদের কাছে হস্তান্তর করে। সেখানে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাধ্য করে। তারা অনিচ্ছা প্রকাশ করলে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়। খাবার বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরবর্তীতে তারা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিআইডি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে- যুদ্ধে নাটোরের সিংড়া থানার হুমায়ুন কবির নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এই ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশ থানার বাসিন্দা মো. আকরাম হোসেন (২৪) প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতের তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি অন্যান্য ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার বনানী থানায় মামলা করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি তদন্ত শুরু করে ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি জানায়, গ্রেফতার তামান্না নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। সিআইডি জানতে পেরেছে, একইভাবে ১০ জনের আরেকটি দল সৌদি আরবে অবস্থান করছে।তাদের রাশিয়া নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করানোর বিষয়ে জানাজানি হওয়ায় তারা রাশিয়া যেতে অস্বীকার করেছেন এবং তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তারা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছেন না এবং দেশেও ফিরতে পারছেন না। এ ধরনের সাধারণ নিরীহ মানুষদের যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রেরণা জুগিয়েছে গ্রেফতার তামান্নার ভাই তুহিন, যিনি বর্তমানে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।
এছাড়াও সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একই সঙ্গে মানবপাচারের এই নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি জোর তদন্ত এবং গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।