আইজিপির কাছে তরুণীর অভিযোগ
ঘুস নিয়ে ধর্ষককে ছেড়ে দেন ওসি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৪ এএম
ফাইল ছবি
ঘুসের বিনিময়ে ধর্ষককে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ওসি এমএ বারীর বিরুদ্ধে। এমনকি দুদিন ধরে থানায় ধরনা দিলেও ওসি ভুক্তভোগীর মামলা নেননি।
রোববার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর এই অভিযোগ করেন এক তরুণী। সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ওই তরুণীকে অপহরণের পর সপ্তাহব্যাপী আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী হাসানের বিরুদ্ধে।
রোববার পুলিশ হেডকোয়াটার্সে ‘আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং সেলে’ ওসির বিরুদ্ধে দেড় লাখ টাকা ঘুসের বিনিময়ে ধর্ষক হাসানকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন ওই তরুণী।
অভিযোগপত্রে তিনি জানান, ৬ মাস ধরে তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল ইলিয়াসদী গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিনের ছেলে হাসান। রাজি না হওয়ায় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। ১৭ জানুয়ারি দুপুরে দড়িকান্দিতে মুখে স্প্রে করে তাকে অজ্ঞান করে হাসান। পরে একটি প্রাইভেটকারে সাভারের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে একটি অন্ধকার ঘরে আবিষ্কার করেন। এ সময় লম্পট হাসান দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এক সপ্তাহ ধরে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ২৪ জানুয়ারি কৌশলে পালিয়ে এক ব্যক্তির মোবাইল থেকে তার ভাইকে ফোন করলে তিনি তাকে উদ্ধার করেন।
তরুণী আরও জানান, ওই দিনই তিনি অভিভাবকদের নিয়ে সোনারগাঁ থানায় যান এবং অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করতে চান। কিন্তু থানার ওসি এমএ বারী মামলা না নিয়ে তাকে একটি অভিযোগ দিতে বলেন। এমনকি তাকে মেডিকেল টেস্টের জন্য হাসপাতালেও পাঠাননি তিনি।
এদিকে, শুক্রবার গভীর রাতে অভিযুক্ত হাসানকে ইলিয়াসদী থেকে আটক করে পুলিশ। শনিবার সকালে থানায় গিয়ে তরুণী দেখতে পান, ধর্ষণের মামলা না দিতে ওসি এমএ বারীকে দেড় লাখ টাকা (৩টি ৫০ হাজার টাকার বান্ডেল) ঘুস দিচ্ছে আসামির লোকজন। এ সময় ওসি আসামি পক্ষের লোকদের বলেন, পুলিশ যখন ধরে এনেছে এমনিতে তো আর ছাড়া যাবে না। আসামিকে আমরা সন্দেহভাজন হিসাবে কোর্টে চালান দেব, যাতে আপনারা বিকালের মধ্যেই আসামির জামিন করতে পারেন।
ওই তরুণী বলেন, ওসির কথামতো শনিবার বিকালেই খালাস পেয়ে বাড়ি এসে হাসান তার বিরুদ্ধে থানায় করা অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে- নইলে সপরিবারে হত্যা করে লাশ গুম করা হবে। তরুণী আইজিপিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত ওসির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হাসানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি এমএ বারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযোগের কোনো প্রমাণ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।