Logo
Logo
×

অপরাধ

বিদেশি এয়ারলাইন্সে চাকরির নামে প্রতারণা, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৪

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১৭ পিএম

বিদেশি এয়ারলাইন্সে চাকরির নামে প্রতারণা, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৪

বিদেশি এয়ারলাইন্স কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে শতাধিক বেকার তরুণ-তরুণীর সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। 

গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ বিক্রেতা এমএ হক আলম ফরহাদী (৬০), মেহেরাব হোসেন (২১), রাসেল হোসাইন (৩০) ও শাহাদাত হোসেন (৩৫)। অভিযানের সময় চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া নগদ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা, প্রতারণায় ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মনিটর, বিপুল সংখ্যক চাকরির আবেদনপত্রসহ মালামাল উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন।

তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটি মাত্র এক মাসে চটকদার বিজ্ঞাপনে বিদেশি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে শুধু ইন্টারভিউর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রের টার্গেট ছিল আগামী ছয় মাস চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউ ও প্রশিক্ষণের নামে অন্তত ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর ভাটারায় ‘সুসিং টাওয়ার’ ভবনে অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ কোম্পানি লিমিটেড (এএনএ) নামের বিদেশি বিমান সংস্থার নামে  জাঁকজমকপূর্ণ অফিস খুলে বসে চক্রটি। এয়ার হোস্টেজসহ বিভিন্ন পদে লোভনীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদ পাতে এই চক্র। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে অন্তত ২০০ চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন। এরমধ্যে বাছাই করে ১৭০ জনকে চাকরির ইন্টারভিউর জন্য ডাকা হয়। ইন্টারভিউতে বসার ক্ষেত্রে অগ্রিম আদায় করা হয় ১ থেকে ২ লাখ টাকা। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে আরও ৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়। মাত্র এক মাসে প্রায় অর্ধশত চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। 

র‌্যাব-১০ অধিনায়ক বলেন, প্রতারক চক্রের মূলহোতা আলম ফরহাদী সামান্য পড়াশোনা করে ফেনীতে নিজ এলাকায় হোমিওপ্যাথি ওষুধ বিক্রি করতেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় এসে অল্প সময়ে বেশি টাকা আয় করতে বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। প্রতারণা করতে গিয়ে নিজেকে বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা, দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। এমনকি ভুক্তভোগী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে তার তিন সন্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতেন। সম্প্রতি তিনি এএনএ নামের জাপানি এয়ারওয়েজ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদ পাতেন। মাত্র একমাসে তার মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন শতাধিক চাকরিপ্রার্থী। হাতিয়েছেন কোটি টাকা।

অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দীন আরও বলেন, গ্রেফতার আলম ফরহাদী র‌্যাবের কাছেও ১৮-১৯ বছর ধরে দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন বলে পরিচয় দেন। যদিও যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায় তিনি সরকারি কোনো পদেই নেই। ফরহাদীর বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় প্রতারণা ও মানি লন্ডারিংয়ের দুটি মামলা রয়েছে।  

ফরহাদী ছাড়া গ্রেফতার বাকিদের বিষয়ে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক জানান, গ্রেফতার মেহেরাব হোসেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। চাকরির খোঁজ করতে ফরহাদীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে মোটা অংকের টাকা বেতনের প্রলোভনে এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে যান। প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন মেহেরাব। গ্রেফতার শাহাদাত হোসেন পড়ালেখা শেষ করে বেকার ছিলেন। এর আগে কয়েক মাস একটি এয়ার টিকিটিং কোম্পানিতে চাকরি করেন। সহকর্মীর মাধ্যমে ফরহাদীর সঙ্গে পরিচয় হলে চক্রে যোগ দিয়ে রিজার্ভেশন অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন। গ্রেফতার রাসেল হোসাইন পড়াশোনা শেষে চাকরি খুঁজতে গিয়ে ফরহাদীর সঙ্গে পরিচয়। পরবর্তী সময় ফরহাদীর নতুন অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। গ্রেফতার প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম