বিমানে নিয়োগ কেলেংকারি: ক্যাপ্টেন সাজিদকে অপসারণ, পাইলট স্ত্রীর সনদ জাল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ১০:০০ পিএম
ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদ ও তার স্ত্রী সাদিয়া আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রশিক্ষণ বিভাগের প্রধানের পদ থেকে ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তিনি বোয়িং-৭৭৭ এর লাইন পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ বিষয়ে বিমান বৃহস্পতিবার একটি অফিস আদেশ জারি করেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, ক্যাপ্টেন সাজিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্ত্রী সাদিয়া আহমেদসহ অন্যদের অনৈতিক সুবিধা দেওয়া, ককপিট ক্রুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও বৈষম্যসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিমান কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে বৈমানিক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট অপারেশনস পরিচালক ক্যাপ্টেন সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে গত সোমবার কমিটি গঠন করা হয়। অপর দুই সদস্য হলেন- ফ্লাইট সেফটি বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন ইনাম তালুকদার ও ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিং তাপস আহমেদ। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। এরপর ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এলো।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তড়িঘড়ি করে ১৪ জনকে বৈমানিক হিসেবে নিয়োগ দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। গত এক বছরে এসব বৈমানিকদের প্রশিক্ষণ ও বেতন মিলিয়ে বিমানের খরচ হয় কয়েক কোটি টাকা। একাধিক বৈমানিকের জাল সনদ জমা, লাইসেন্সিং পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। যাতে ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ ওঠে।
নিয়োগপ্রাপ্ত পাইলটদের মধ্যে সাদিয়া ইসলাম বিমানের চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। অভিযোগ আছে, সাজিদের চেষ্টা-তদবিরেই নিয়োগ পান তার স্ত্রী। সাম্প্রতিক এক তদন্তে জানা যায়, সাদিয়া ইসলাম নিয়োগের সময় জাল শিক্ষাসনদ জমা দিয়েছেন। ওই জাল সনদ অনুযায়ী তিনি এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন বিজ্ঞান শাখা থেকে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তিনি শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজ থেকে মানবিক শাখা থেকে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেছেন। শুধু তাই নয়, বৈমানিক মেহেদী আল ইসলামের জমা দেওয়া এয়ারলাইন্স ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্স (এটিপিএল) জাল ছিল। এরই মধ্যে ফার্স্ট অফিসার আল মেহেদী ইসলামের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
জাল সনদ প্রসঙ্গে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজীম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ যদি তথ্য গোপন করে এবং সেটি যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়ম করে পার পেয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’