সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে গাভীর বাচ্চা জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের বাঘার গ্রামে একটি গাভীর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই বিরল ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গাভী ও বাছুরকে এক নজর দেখতে গৃহস্থ বাড়িতে ভিড় করছেন কৌতূহলী এলাকাবাসী।
গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে গাভীর প্রসব ব্যথা শুরু হলে গাভীর মালিক শংকর হালদারের স্ত্রী পারুল হালদার এআই টেকনিশিয়ান হেলাল উদ্দিনকে খবর দেন। তবে বহু চেষ্টা করেও স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসব করানো সম্ভব হয়নি। এরপর উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের ডাক্তারদের ডাকা হয়।
এআই টেকনিশিয়ান হেলাল উদ্দিন বলেন, মাঝের মধ্যে আমি এটাকে দেখভাল করি। ১৩ তারিখ যখন বাচ্চা প্রসাবে ব্যথা ওঠে আমাকে গরুর মালিক ফোন দেন। আমি এখানে আসি। কিন্তু বাচ্চা পজিশন মতো না আসায় গৌরনদী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান ফরিদ স্যারকে ফোন দেই। তখন তিনি এসে দেখেন ঠিকভাবে বাচ্চা প্রসাব করা যাচ্ছে না। তখনই গাভীর মালিক বিষয়টি জানান। তখনই আমরা এ সিজার প্রসেসিং শুরু করি।
ডা. ফরিদ বলেন, যখন বেদনা ওঠে হেলাল সাহেব এসে বাচ্চা প্রসব করার জন্য নরমালি চেষ্টা করেন। ওয়াটার ব্যাগ ভেঙে যায় কিন্তু উনি স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসাব করতে ব্যর্থ হন। তারপর আমাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ভেটেরিনারি হাসপাতালে খবর দেন। আমরা ওইখান থেকে টিম নিয়ে এখানে ঘটনাস্থলে আসে আমিও এসে চেষ্টা করি। মেডিসিন দিয়ে চেষ্টা করি রাস্তাটা প্রশস্ত করার জন্য। যেহেতু প্রশস্ত হয়নি টেনে হেচড়ে বের করলে গাভী এবং বাচ্চা দুটোই ঝুঁকির মধ্যে থাকত আর তারপরে আমাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ সরকার স্যারের পরামর্শক্রমে আমরা সিজার করার সিদ্ধান্ত নিই।
তিনি আরও জানান, সিজার একটি জটিল প্রক্রিয়া হওয়ার কারণে অনেকে এটা করতে চায় না। তার ওপর যন্ত্রপাতি না থাকা এবং অভিজ্ঞতা না থাকায় এটা করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রয়োজন দক্ষ ভেটেরিনারি সার্জন। দরকার লজিস্টিক সাপোর্টও।
এলাকাবাসী জানান, কোনো জায়গায় আমরা গরুর সিজার দেখি নাই। এই প্রথম আমরা সিজার দেখছি। বাছুর-গাভী সুস্থ আছে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের এআই টেকনিশিয়ান হেলাল উদ্দিন জানান, তার ১৪ বছরের চাকরি জীবনে গরুর সার্জারির ঘটনা এটাই প্রথম। বিরলের ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে বেশ খুশি প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মচারীরাও।
এদিকে সফল সার্জারি হওয়ায় ডাক্তারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন গাভী পালনকারী পারুল হালদার। তিনি বলেন, ‘বড় ডাক্তারের সঙ্গে আরও ডাক্তাররা আসছে, আশপাশের মানুষ চেষ্টা কইরা পারে নাই। বড় ডাক্তারের চেষ্টা করছে আসে না নরমালে।’
