
প্রিন্ট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪০ পিএম
চিকিৎসার অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০১ পিএম

আরও পড়ুন
রাজশাহী মহানগরীর লক্ষীপুর এলাকার মুঞ্জু হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় অবহেলায় অপারেশন করা এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিকিৎসক-নার্স না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে বেনু বেগম (৭০) নামে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
বুধবার সকাল ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার সুজানগর মিতালী ক্লাব এলাকায়। তিনি মতিনের মেয়ে ও বশির আহম্মেদের স্ত্রী।
বেনু বেগমের স্বজনরা জানান, পায়ের হাড় ভেঙে গেলে গত ৬ এপ্রিল তাকে মঞ্জু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার পায়ের হাড়ের অপারেশন করেন ডা. হাবিবুল হাসান। অপারেশন পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাকে পর্যবেক্ষণ কক্ষে না রেখে সরাসরি ওয়ার্ডে দেওয়া হয়।
বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বেনু বেগমের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এ সময় তার জরুরি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক-নার্স ছিলেন না। অক্সিজেন সিলিন্ডারও ছিল না। রোগীর স্বজনরা দায়িত্বশীল কাউকেই পাননি। এক পর্যায়ে শ্বাসকষ্টে কাতর বেনু বেগমের মৃত্যু হয়।
এদিকে অবহেলায় বেনু বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুর করতে উদ্যত হন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমারসহ অন্য স্টাফরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বিএনপি নেতারা ক্লিনিক মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমঝোতা করে দেন।
নিহত বেনু বেগমের সন্তান সনি বলেন, অপারেশনের পর আমার মা সুস্থ ছিলেন। তবে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ার পর সেখানে কোনো চিকিৎসক ও নার্স ছিলেন না। সময়মত সঠিক চিকিৎসা পেলে আমার মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন না। চিকিৎসা অবহেলায় মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে চিকিৎসা অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমার বলেন, রোগীর স্বজনরা যেসব অভিযোগ করছেন, সেগুলো সঠিক না। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরেও রোগী মারা গেছেন। মৃত্যুর ওপরে কারও হাত নেই।
রাজশাহীর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহাবুবা খাতুন বলেন, এ বিষয়ে আমি জানি না। যদি রোগীর স্বজনেরা সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহানগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। তবে রোগীর স্বজনেরা এখনো কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।