
প্রিন্ট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম
গোয়ালন্দে বঞ্চিত প্রকৃত ৪০০ জেলে, সরকারি সহায়তা পান ভুয়া জেলেরা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম
-67f52b2890481.jpg)
আরও পড়ুন
প্রকৃত জেলেদের খাদ্য সহায়তার বাইরে রেখে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীতে শুরু হয়েছে জাটকা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান।
‘জাটকা ধরা বন্ধ হলে, ইলিশ উঠবে জাল ভরে’- প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলার দৌলতদিয়া ৬নং ফেরিঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও নৌ-র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলে নেতা আসলাম মোল্লার অভিযোগ, বিগত দিনে জেলে কার্ড বিতরণে অনিয়ম করা হয়েছে। যে কারণে শুধু দৌলতদিয়া ইউনিয়নেই অন্তত ৪০০ প্রকৃত জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা হতে বঞ্চিত রয়েছেন। গত বছর কালবৈশাখী ঝড়ে ৪ জন জেলের ৫টি মাছ ধরার বড় নৌকা ডুবে ভেসে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা কোনো ধরনের প্রণোদনা পাননি। বঞ্চিত জেলেরা বারবার অফিসে ধরনা দিয়েও নিবন্ধিত হতে পারেননি। অথচ বহু অমৎস্যজীবী অনিয়মের মাধ্যমে জেলে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সরকারি সুবিধা ভোগ করছেন।
এ অবস্থায় সরকারি সহায়তা বঞ্চিত এসব প্রকৃত জেলেরা বেঁচে থাকার তাগিদে জাটকা শিকারে ব্যবহৃত কারেন্ট জাল, চায়না জালসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ জাল ব্যতিত সাধারণ জাল দিয়ে বড় বড় রুই, কাতলা, পাঙ্গাস, বাঘাইড়, আইড়সহ অন্যান্য বড় মাছ এবং সুতি জাল দিয়ে বেলে, ট্যাংরা, পুঁটির মতো ছোট মাছ ধরার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এ সময় পদ্মা নদীর জেলে সেকেন শেখ, চানমিয়া শেখ, বাবু সরদার, লোকমান সরদার, মিঠু খানসহ কয়েকজন বলেন, তারা বারবার মৎস্য অফিসে ধরনা দিয়েও তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। ঝড়ে নৌকা হারালেও কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি তারা।
উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ীর স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাজহারুল ইসলাম।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, কোস্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার (সিপিও) শফিকুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, গোয়ালন্দ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলায় ১২৬৬ জন কার্ডধারী জেলে রয়েছেন। তাদের ইতোপূর্বে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। তবে দৌলতদিয়া এলাকায় বাদ পড়া জেলেদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এবং তালিকা হতে অমৎস্যজীবীদের বাদ দিতে প্রয়োজনে তালিকা হালনাগাদ করা হবে।
ইউএনও নাহিদুর রহমান বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষায় আমরা প্রয়োজন হলে কঠোর হবো। জেলেদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
প্রধান অতিথি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ঘোষণা করেছে। নিষিদ্ধকালীন নদীতে জাটকা শিকার বন্ধ রাখা হলে আমাদের নদীগুলো বড় বড় ইলিশে ভরে উঠবে। তাই সাময়িক কষ্ট হলেও তিনি জাটকা আহরণ বন্ধে জেলেদের প্রতি আহবান জানান।