
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
ওসি এসআইসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম

আরও পড়ুন
রাজবাড়ীতে সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়াই এক গৃহবধূকে (২৫) আটক করে অপহরণ, ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, একই থানার এসআই হিমাদ্রি হাওলাদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার দুপুরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক শেখ মফিজুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত
করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর কার্যালয়ের
পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী গৃহবধূ উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের লক্ষণদিয়া গ্রামের
বাসিন্দা। পুলিশের দুই সদস্য ছাড়া মামলার আরেক আসামি হলেন উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের
কাচারীপাড়া গ্রামের এতেম শেখের ছেলে আরিফ হোসেন।
ওসির দাবি, মামলার বাদী গৃহবধূ ও তার স্বামী একটি অপহরণ মামলার নিয়মিত
আসামি। তাকে গ্রেফতার করায় পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে জানান
তিনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২ এপ্রিল রাত ১১ টার দিকে পাংশা থানার ওসির
নির্দেশে এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধূর বাড়িতে ডান। এ সময়
এসআই হিমাদ্রি ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধূর বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তার স্বামীকে খোঁজার
অজুহাতে তল্লাশি চালান। একপর্যায়ে স্বামীকে না পেয়ে ওই গৃহবধূকে জাপটে ধরে তারা। ওই
নারীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তারা ওই গৃহবধূকে
টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করার সময় তিনি ওয়ারেন্ট দেখতে চান। এ সময় তারা জানান, ওসির
নির্দেশে ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। পরে তাকে থানায় এনে শারীরিক, মানসিক
ও দৈহিক নির্যাতন চালানো হয়।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বজনসহ সাক্ষীরা ওই গৃহবধূকে ছাড়িয়ে আনার
জন্য থানায় গেলে ওসি, এসআই ও সহযোগী আরিফ তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে
এসআই হিমাদ্রি ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে গৃহবধূকে ছেড়ে দেন। তবে দাবি
করা মোটা অঙ্কের টাকা না দিলে গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেফতার করে অস্ত্র ও মাদক মামলায়
ফাঁসানোর হুমকি দেন তারা। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর
অভিযোগ করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর
(পিপি) অ্যাভোকেট জাহিদ উদ্দিন মোল্লা বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারক গৃহবধূর করা মামলাটি
আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে
নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, উপজেলার
মাছপাড়ার এক কিশোরী (১৭) অপহরণের ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে
থানায় মামলা করেন। ওই মামলার তিন নাম্বার আসামি শরিফুল ইসলাম। ৫ নাম্বার আসামি তার
স্ত্রী রিমা খাতুন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার।
ওসি আরও বলেন, তদন্তে জানতে পারেন অপহৃত কিশোরী মামলার ৫ নাম্বার আসামি
রিমা খাতুনের অধীনে রয়েছে। ৩ এপ্রিল রাতে অভিযান চালিয়ে রিমা খাতুনকে আটক করে থানায়
আনার পর ছাড়িয়ে নিতে নানা স্থান থেকে ফোন করা হয়। তাদের কথা মতো পরদিন ৪ এপ্রিল কিশোরীকে
এলাকায় দিয়ে তাদের জিম্মায় গৃহবধূ রিমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি থানা থেকে ছাড়া পেয়েই
মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। আমরা আইনগতভাবে মোকাবিলা করব।