
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৯ পিএম
রায়পুরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৮ পিএম

আরও পড়ুন
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার অন্তত ৬ গ্রামের মানুষকে ব্যবহার করতে হয় বোয়াডার বাজার সেতু। গ্রামগুলো থেকে উপজেলা সদর যেতে অপরিহার্য সেতুটির দুই পাশে আছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার। কিন্তু ৩০ বছর সংস্কার না করায় সেতুটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
রায়পুর উপজেলার চরপাতা ইউপির এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া ইউপির বোয়াডার বাজারসংলগ্ন দুই ইউনিয়নের মাঝে ডাকাতিয়ার নদী সংযোগ খালের উপর সেতুটি বোয়াডার বাজার সেতু হিসেবে পরিচিত।
১২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৭ ফুট প্রস্থের সেতুটি ১৯৯৫ সালে নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইট ও লোহার ওপরে কনক্রিট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। ইট-রড-সিমেন্টের ৬টি পিলারের ওপর সেতুটি তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ৪টি পিলারে মরিচা পড়েছে। একটি রেলিং ভেঙে গেছে। সেতুর মাঝামাঝি জায়গায় কাঠ দিলেও তা বড় গর্ত হয় এবং এবড়ো-থেবড়ো অবস্থায় আছে।
এর মধ্যে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সেতুর আশেপাশের গ্রামগুলোর অন্তত এক হাজার মানুষকে প্রতিদিন প্রাত্যহিক কাজে পার হতে হয় সেতুটি। এই সেতু দিয়ে নসিমন, ইজিবাইক, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করে। রিকশা বা ভ্যানে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হয়। কয়েকজন শিশু ও বৃদ্ধ সেতুর গর্ত দিয়ে পানিতে পড়ে যায় বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, চরপাতা, বোয়াডার বাজার, কেরোয়া, আলোনিয়া, চরদুঃখিয়া, গৃদকালিন্দিয়া, সাহেবগঞ্জ, গাছিরহাট বাজার, রায়পুর, গৃদকালিন্দিয়া বাজার ও চরমান্দারি এলাকার বাসিন্দাদের এই সেতু দিয়েই চরমান্দারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরপাতা গাছিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মজিবুল হক একাডেমি, গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত উচ্চ বিদ্যালয়, ডিগ্রি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং রায়পুর শহরে ও বাজার এলাকায় যেতে হয়।
চরপাতা গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আলমগীর হোসেন (৩০) বলেন, ‘এই সেতু দিয়ে ভ্যান নিয়ে আসলে বিপদে পড়তে হয়। যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পরও পেছন থেকে না ঠেললে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না।’
বোয়াডার এলাকার বাসিন্দা সমাজ সেবক ফয়েজ উল্যা মিয়াজি বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে সেতুর এই অবস্থা। চরপাতা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েও কোনো কাজ হয়নি।’
জানতে চাইলে চরপাতা ইউপি সদস্য আমিন পাটোয়ারী বলেন, ‘হাজারো দিনমজুর মানুষকে এই সেতু দিয়েই চলাচল করতে হয়। আমি নিজেই তো এর ভুক্তভোগী। স্থানীয় সরকার বিভাগ কবে নতুন করে খালের ওপর এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিবেন, এই আশায় আছি।’
এ বিষয়ে রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, ‘রায়পুরের চরপাতা ইউপির বোয়াডার বাজার এলাকার পুরোনো সেতুর জায়গায় নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগে ফাইল পাঠানো হয়েছে। ৩৯ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.২ মিটার প্রস্থের সেতুর নকশা করা হয়। অনুমোদন পাওয়া গেলে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে’।