
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০২ এএম
‘আমাকে ক্ষমা করে দেন’ বলেই ধর্ষণের ঘটনার সমাধান

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

আরও পড়ুন
‘আমাকে ক্ষমা করে দেন’ বলেই ধর্ষণের ঘটনার সমাধান হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৫নং গাংগাইল ইউনিয়নের জলহরী গ্রামে ধর্ষণের ঘটনায় ঘরোয়া সালিশে ধর্ষিতার পরিবারের কাছে ধর্ষকের মুখে উচ্চারিত এমন বাক্যের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রায় দেড় মাস পূর্বে জলহরী গ্রামে দুই সন্তানের জননী রাতের বেলায় ঘরের মধ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হন। এ সময় ধর্ষিতার শাশুড়ি ধর্ষককে হাতে-নাতে দেখে ফেলেন। তখন ওই নারীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ধর্ষক চলে যায়।
পরে এ ঘটনায় ধর্ষিতার পরিবার হুমকির মুখে পড়ে আইনের আশ্রয় না নিয়ে নীরব থাকে। একপর্যায়ে ধর্ষকের পরিবার ঘরোয়াভাবে সালিশের মাধ্যমে ধর্ষককে ধর্ষিতার কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়।
ধর্ষণের মতো ব্যাপার ঘটনাকে এভাবে ধামাচাপা দেওয়ায় এলাকার কতিপয় যুবক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়ে এলাকায় ধর্ষকের ছবি সম্মিলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
ধর্ষক জলহরী গ্রামের কালা মিয়ার পুত্র মামুন মিয়া। মামুন মিয়া দুই সন্তানের বাবা, ঘরে তার স্ত্রীসহ মা-বাবা পরিবার-পরিজন রয়েছেন। তবে মামুন মিয়া নিজ এলাকায় দাপট খাটিয়ে চলেন বলে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চায় না।
এ বিষয়ে সরেজমিন ধর্ষিতার পরিবার ও ধর্ষকের পরিবারের সঙ্গে কথা বললে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
ধর্ষিতার শাশুড়ি ও চাচাশ্বশুর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা সমাধান হয়ে গেছে। আমরা নিজেরাই সালিশের মাধ্যমে শেষ করে দিয়েছি। তবে হুমকির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
অপরদিকে ধর্ষকের পিতা কালা মিয়া এ ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অনেক আগেই এর সমাধান হয়েছে। এটা নিয়ে লিখলে আর কী হবে?
এদিকে ধর্ষক মামুন মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধর্ষণ ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কে বা কারা আমার বিরুদ্ধে লিফলেট বিতরণ করেছে তা আমি জানি না। এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এই মাত্র শুনেছি। ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।