
প্রিন্ট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৯ এএম
বোরো জমিতে ভুঁইফোড় মাদরাসা–‘শিক্ষক’ তালিকায় আত্মীয়স্বজন, নেই ছাত্র

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্ব বেগুনবাড়ীর নতুনপাড়া গ্রামে ‘নতুন পাড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা’ নামে একটি ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। বোরো জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে তড়িঘড়ি করে তৈরি হচ্ছে ঘর, টানানো হয়েছে সাইনবোর্ড—তাতে লেখা: ‘প্রতিষ্ঠা ১৯৮১’।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এটি আসলে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং সরকারি সুযোগ-সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে এক ধরনের জালিয়াতি।
তারা বলছেন, ১৯৮১ সালে একই নামে একই এলাকায় একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা পরে দাখিল মাদরাসার সঙ্গে একীভূত হয় এবং এমপিওভুক্ত হয় ২০০২ সালে। এখন ওই একই নাম ব্যবহার করে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে আরেকটি ‘মাদরাসা’ প্রতিষ্ঠা করে জাতীয়করণের চেষ্টা করছে একটি চক্র।
অভিযোগ রয়েছে, নতুন করে গড়ে ওঠা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিজেকে দাবি করছেন স্থানীয় শাহিনুর আলম নামের এক ব্যক্তি। শিক্ষক তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় পূর্ব বেগুনবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মতিনের আত্মীয়রা-ভাতিজা ও শ্যালিকা। অথচ সেখানে কোনো শিক্ষার্থী বা নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম নেই বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ব্যক্তি সালাম আহমেদ বলেন, নতুন পাড়া গ্রামের মোরশেদ আলম ও তার স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে জমি লিখে নিয়েছে তারা। এখন সেখানে ঘর উঠানো হচ্ছে।
আরেক বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন বলেন, আগে সেখানে শুধু ধান চাষ হতো, এখন ভেকু চালিয়ে জমি কেটে ঘর বানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা ইতোমধ্যে এ গায়েবি প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। এমনকি শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাদের দাবি, ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি বাতিল করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে শুধু ফসলি জমি পেয়েছি, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাইনি।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, নতুন পাড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।