
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম
স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১৭ পিএম

আরও পড়ুন
কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে ওমর ফারুক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ওমর ফারুক কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের ১১ নম্বর ওয়ার্ড শাখার যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ভূমিদস্যুতা চালিয়ে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও তিনি একইভাবে দখলবাজি অব্যাহত রেখেছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন আফসেল বলেন, ওমর ফারুক ও তার সহযোগীরা রাতের আঁধারে বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়াল তুলে দিয়েছে এবং সেখানে স্থাপনা নির্মাণের পাঁয়তারা করছে। নিষেধ করা হলেও তারা থামছে না।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দখলের জন্য তারা বারবার ষড়যন্ত্র করছে। বিদ্যালয়ের খতিয়ানভুক্ত জমির সঙ্গে ফারুক গংদের দাবিকৃত জমির কোনো মিল নেই। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন খতিয়ান ও দাগ নম্বরের জমি। তবুও তারা জোর করে বিদ্যালয়ের জায়গা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সমর চন্দ্র দেবনাথ বলেন, এখন পর্যন্ত দুইবার অ্যাডভোকেট কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং উভয়বারই কমিশনের রায়ে বলা হয়েছে যে, বিদ্যালয়ের জমিতে ফারুক গংদের কোনো মালিকানা নেই।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফারুক গংদের জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের জমির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করেও তারা দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গিয়াস উদ্দিন আফসেল অভিযোগ করেন, ভূমিদস্যু ফারুক গং ও তার পরিবার সব আইন উপেক্ষা করে বারবার বিদ্যালয়ের জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি তারা বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটের সামনে দেয়াল তুলে দিয়েছে, যা বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। একটি ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে যে, আমি ভবন নির্মাণের শর্ত হিসেবে ফ্লোর লিখে দিতে বলেছি। কিন্তু যদি কেউ এ সংক্রান্ত কোনো অডিও-ভিডিও প্রমাণ দেখাতে পারে, তাহলে আমি সমস্ত দায় মাথা পেতে নেব। কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবে না, কারণ অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ওমর ফারুকের পাল্টা বক্তব্য
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, এখানে বিদ্যালয়ের কোনো জায়গা নেই। এটি আমার খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি। এরপরও আমি বিদ্যালয়ের বিপক্ষে নই। কিন্তু আমার খতিয়ানভুক্ত খালি জায়গাগুলোতে তারা স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এসিল্যান্ড সেখানে গিয়ে মৌখিকভাবে নিষেধ করেছেন বলে শোনা গেছে, কিন্তু আমাকে তো কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। এছাড়াও, জায়গাটিতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে ওমর ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে আমাদের অনেক জমিজমা বেদখল হয়ে গেছে। কিন্তু কখনো তো আমি দাবি করিনি যে, আমি আওয়ামী লীগ করি। এছাড়াও, কোনো মিটিং-মিছিল বা কোনো নেতার সঙ্গে আমার একটি ছবি পর্যন্ত কি কেউ দেখাতে পারবে? অথচ গিয়াস উদ্দিন আফসেল এর ছেলে ছাত্রলীগ করতো যার প্রমাণ ছবি ভিডিও এখনো রয়েছে।