
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম
সুজানগরে ১০ টাকায় ঈদ বাজার

সুজানগর (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম

আরও পড়ুন
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। নতুন কিছু ছাড়া ঈদের খুশি আর আনন্দে যেন অনেকটা অপূর্ণতা থেকে যায়। ঈদকে কেন্দ্র করে সমাজের বিত্তবানরা পোশাক-জুতাসহ নানা কিছু কিনে থাকেন, কিন্তু সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে তা অনেকাংশেই সম্ভব হয়ে ওঠে না।
এ ভাবনাকে সামনে রেখেই অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত ও নিম্নআয়ের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে মাত্র ১০ টাকায় পছন্দের ঈদ বাজারের আয়োজন করেছে পাবনার সুজানগরে আলোর পথ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
বুধবার পৌর শহরের শহিদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঈদ বাজারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ।
উদ্বোধনকালে বিশিষ্ট সমাজসেবক সুলতান মাহমুদ, সুজানগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যুগান্তরের উপজেলা প্রতিনিধি এমএ আলিম রিপন, পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর মুশফিক সালেহীন নাইম, আলোর পথ সংগঠনের সভাপতি শেখ রওনক যুথী, সাধারণ সম্পাদক নাইম হোসেনসহ সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ ঈদ বাজার করতে আসা হতদরিদ্র প্রত্যেকের হাতে ইফতার সামগ্রী তুলে দেন।
উদ্বোধনের পর থেকেই বড় ও ছোটদের পোশাকসহ নানা ঈদসামগ্রী মাত্র ১০ টাকায় এ বাজার থেকে কিনছেন নিম্নআয়ের ক্রেতারা।
আয়োজকরা জানান, অসহায় দরিদ্র মানুষের ঈদ আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে, সেই লক্ষ্যে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে অসহায়দের হাতে ঈদের পোশাকসহ অন্যান্য সামগ্রী তুলে দিতেই এমন আয়োজন করেছেন তারা।
এমন ভিন্নধর্মী আয়োজনে বেশ আনন্দিত হয়ে ওঠেন অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষজন। মাত্র ১০ টাকায় পছন্দের পণ্য হাতে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা ছোট-বড় সববয়সীরা।
বাজারে আসা মমিন নামে এক দরিদ্র ভ্যানচালকের সঙ্গে কথা হয়। সঙ্গে এসেছিল তার ৬ বছরের ছোট্ট শিশু। মমিন জানান, মাত্র ১০ টাকায় নিজের জন্য একটি লুঙ্গি এবং ছোট্ট বাচ্চার জন্য জামা পেয়ে বেশ খুশি। আমরা গরিব অসহায় মানুষ। এত টাকা খরচ করে নতুন পোশাক কেনার ক্ষমতা নেই। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে সামান্য যে কয় টাকা পাই, তা দিয়ে সংসারের খরচ চালানোর পর বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়াই কষ্ট হয়ে যায়। সেখানে মাত্র ১০ টাকায় ছেলেটির জন্য নতুন পাঞ্জাবি এবং আমার জন্য লুঙ্গি পেলাম।
গৃহকর্মী সাথি খাতুনের সঙ্গে বাজারে এসে পছন্দের জামা পেয়ে বেশ খুশি ছিল তার ছোট্ট শিশু সালেহা। সে জানায়, মাত্র ১০ টাকা দিয়ে তার পছন্দের জামা কিনেছে। খুব খুশি লাগছে তার। ঈদের মার্কেট হয়ে গেছে। নামমাত্র মূল্যে পছন্দের পণ্য সুবিধাবঞ্চিত এসব মানুষদের হাতে তুলে দিতে পেরে সন্তুষ্টির কথা জানান আয়োজকরাও।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, ১০ টাকায় ঈদের পোশাক এটা ভালো একটি উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়ে ধনী গরীব ভেদাভেদ ভুলে ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ভাগাভাগি হবে। দরিদ্র অনেকেই মার্কেটে গিয়ে বাচ্চাদের ভালো পোশাক কিনে দিতে পারে না। তাদের জন্য ঈদ একটি অন্ধকার অধ্যায়ে রূপ নেয়। এই উদ্যোগের ফলে অনেক অসচ্ছল পরিবারের শিশু নামমাত্রমূল্যে ঈদের আনন্দ উপলব্ধি করতে পারবে। এজন্য এ উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।