
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম
ওড়াকান্দিতে বুধবার রাত থেকে স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

আরও পড়ুন
হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব উৎসব উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে শুরু হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ স্নানোৎসব ও তিন দিনব্যাপী বারুণী মেলা।
বুধবার দিবাগত রাত ১১টায় শুরু হচ্ছে স্নানোৎসব। যা বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাত ৯.২৪ টায় পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
স্নানোৎসবে যোগ দিতে এরই মধ্যে দেশের ও দেশের বাইরে থেকে শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার মতুয়া ভক্ত। স্নানোৎসবকে ঘিরে ঠাকুরবাড়ি ঘেঁষে বসেছে বারুণী মেলা।
স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঠাকুর বাড়ি এলাকায় বসানো হয়েছে সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ চৌকি ও সিসি ক্যামেরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহল ও মতুয়া সংঘের দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে প্রতি বছর ওড়াকান্দিতে এ স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এবার শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৪ তম আবির্ভাব উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উৎসবকে ঘিরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ এবং নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক লাখ মতুয়া ভক্তের আগমন ঘটবে ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়িতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্নানোৎসবে যোগ দিতে হাজার হাজার মতুয়া ভক্ত ও অনুসারীরা দূর-দূরান্ত থেকে এসে ঠাকুর বাড়িতে সমবেত হয়েছেন। কেউ কেউ ঠাকুর বাড়িতে বিছানা পেতে স্নানের অপেক্ষায় আছেন। কেউ কেউ দোকানপাট পেতে বসেছেন।
স্নান উৎসবকে ঘিরে ঠাকুর বাড়ির পাশ ঘেঁষে ৬০ একর জায়গাজুড়ে বসেছে লোকজ মেলা। মেলায় কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরি জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী, তালপাখা, চানাচুর, মিষ্টি দোকান, হোটেল-রেস্তোরার দোকান এসেছে।
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের আমবাড়িয়া গ্রাম থেকে আসা বিপুল কুমার মিস্ত্রী বলেন, আমি প্রতি বছর ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়িতে আসি। গত কয়েক বছর করোনার কারণে আসতে পারিনি। এবার কয়েকদিন আগেই এখানে চলে এসেছি। ঠাকুরের পুণ্যভূমিতে আসতে পেরে খুবই ভাল লাগছে।
স্নানোৎসব ও মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুব্রত ঠাকুর জানান, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব উৎসব উদযাপন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভক্তদের জন্য রাতযাপন, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার, দিক-নির্দেশনা সাইনবোর্ড, প্রস্রাব-পায়খানা ও স্নান করে মহিলাদের কাপড় পাল্টানোসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কয়েক লাখ বেশি মানুষের আগমন ঘটতে পারে। বিশ্বের প্রায় ১০টি দেশ থেকে মতুয়া ভক্তরা এ উৎসবে যোগ দিবেন।
গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্নানোৎসবে আগত পূণ্যার্থীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন রয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, স্নানোৎসবকে ঘিরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো ঠাকুরবাড়ি ও তার আশপাশ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।